চারদিকে চলছে জল্পনা। চলছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সহিংস রাজনীতি, বিক্ষোভ। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি যত এগোচ্ছে, একটি কথা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তা হলে বঙ্গে কি রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে?
পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি প্রতিদিন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। নাগরিকপঞ্জি, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধনের প্রতিবাদে গর্জে উঠছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘মানছি না মানব না সিএএ-এনআরসি-এনআরপি’ ধ্বনিতে উত্তাল রাজ্য। পথে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস, জাতীয় কংগ্রেস ও বাম দল।
বিরোধিদের দানি নয়া আইন তাঁরা কিছুতেই মানবেন না, মানবেন না এনআরসি। এগুলো বিভাজনের আইন।
এদিকে গোল খাওয়ার দল নয় বিজেপি। রীতিমতো সেও পাল্লা দিয়ে করে চলেছে মিটিং-মিছিল।
গেরুয়া দল মমতার উদ্দেশে জানাচ্ছে, “এমন কী হয়ে গেল এই সিএএ নিয়ে? এ আইন তো পাস হয়েছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা সংখ্যালঘু নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য। এতে এমন কি ক্ষতিটা হলো রাজ্যের? এই সেদিনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মতুয়া সম্প্রদায়ের লাখো মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য তৎপর হয়েছিলেন। মতুয়াদের নাগরিকত্বের জন্য আন্দোলন করেছিলেন। আজ কেন মমতা নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে?”
সিএএ নিয়ে মমতার তো এতো আপত্তি থাকার কথা নয়। তাহলে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে মুসলিমদের ভোটব্যাংক হ্রাস হওয়ার চিন্তা তাঁর ঘুম উড়িয়েছে।
এদিকে তৃণমূল-বিজেপির এমন সংঘাতের মাঝেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় সম্প্রতি বলেছিলেন, রাজ্যে এমন ভয়ানক পরিস্থিতি চলতে থাকলে রাষ্ট্র[পতি আইন দিতেই হবে। পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রের প্রতি কোন সম্মান প্রদর্শন করে না। চলছে নিজস্ব মতানুযায়ী।
এদিকে রাজ্যপালের সুরেই এবার সুর মেলালেন।
বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পন্ডা বলছেন, ‘ভারতবর্ষের কোনো আইন মানেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাহলে তিনি কি একটি আলাদা ভূখণ্ড চাইছেন? বিজেপি এই রাজ্যে রাষ্ট্রপতির শাসন চায় না। কিন্তু মমতা যেভাবে একের পর এক কেন্দ্রীয় নীতি ও আইনের বিরোধিতা করে চলছেন, তাতে হয়তো কোনো দিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখবেন, বাংলায় রাষ্ট্রপতির শাসন জারি হয়ে গেছে।’
গত রবিবার উত্তর চব্বিশ পরগনার নীলগঞ্জে বিজেপি আয়োজিত এক সভায় কথাগুলো বলেন শঙ্কুদেব পন্ডা। শঙ্কুদেবের এই কথা কিন্তু শ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতির শাসন জারির ইঙ্গিত বহন করে।
এবার জল কতদূর গড়ায়, সেটিই দেখার।