সেক্স এডুকেশন বললেই রক্ষণশীলেরা নাক কুঁচকোন। যেন এর থেকে অপবিত্র শিক্ষা জগতে আর কিছু নেই। আর তাই অভিভাবক, শিক্ষকরা খোলামেলাভাবে সন্তানকে যৌন শিক্ষা দেওয়া থেকে বঞ্চিত করেন। আমাদের সমাজে গুরুজন ও ছোটদের মধ্যে থাকা এই ফারাক তিলে তিলে সন্তানের জীবনকে হতাশার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
কিন্তু এবার থেকে আর তা হবে না। পশ্চিমবঙ্গের ৬ টি জেলার মোট ৩০০টি সরকারি এবং সরকারি সাহায্য প্রাপ্ত স্কুলে ভালো স্পর্শ এবং মন্দ স্পর্শের শিক্ষা দেয়া হবে সরকারের তরফ থেকে।
শিক্ষা প্রদানের দায়িত্বে রয়েছে, চাইল রাইট্স অ্যান্ড ইউ অর্থাৎ ক্রাই।
দেশে, রাজ্যে দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে যৌন হেনস্থা, ধর্ষণ। বিকৃতকামেরা শুধু এক একজন ধর্ষক। তারা কারো বাবা নয়, দাদা নয়, ভাই নয়। আবালবৃদ্ধবনিতা কেউ আজ সেফ নয়।
ফলে অভিভাবকসহ শিক্ষকদের সজাগ হতে হবে মুক্তভাবে যেন ছেলেমেয়েরা বুঝতে শেখে কোনটা গুড টাচ, কোনটা ব্যাড টাচ। এবং সঙ্গে সঙ্গে যেন সে ঘটনার কথা অভিভাকদের জানাতে পারে তারা।
সূত্রে জানা গেছে, শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের যৌন হেনস্থা বন্ধ করার লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন, রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের রিপোর্ট ও বিভিন্ন ব্যক্তি, সংস্থা, শিক্ষা পরিষদের সুপারিশকে একজোট করে স্কুলশিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে শিশু নিরাপত্তা গাইডলাইন তৈরি করা হয়। আইসিএসই, সিবিএসই বোর্ড এবং সংখ্যালঘু পরিচালিত স্কুলগুলি অবশ্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করে রাজ্য সরকারের এই সুপারিশ গ্রহণ করতে পারবে।
নির্দেশনামায় প্রধানশিক্ষকদের উপর সমস্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এ বিষয়ে। আর শুধু ক্লাস নিলেই হবে না, তার অগ্রগতি নিয়ে ৩ মাস অন্তর অন্তর একটি রিপোর্ট পাঠাতে হবে।
পত্রিকার পাতায় চোখ বোলালেই আমরা মায়েরা দেখি চার বছরের শিশু-তিন বছরের শিশুও রেহাই পায় না। আর এখন নতুন করে শুরু হয়েছে আট মাস-বছরখানেকের কন্যাশিশুদের ওপর হয়রানি। দেশ এভাবেই চলছে। শিশু নির্যাতনের ঘটনা চলছে।
সুতরাং অভিভাবকেরা প্রথমে ঘর থেকেই সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার করে বুঝিয়ে দিতে চেষ্টা করুন, কোনটা সুস্থ স্পর্শ কোনটা অসুস্থ।
শরীর সম্পর্কে খুব ছোটবেলা থেকেই সতর্ক করুন।
বাচ্চাকে সুইমসুট রুল শেখান, ছেলে অথবা মেয়ের শরীরে স্যুইমিং কস্টিউম যে অংশ ঢেকে রাখবে তা যে গোপনাঙ্গ সেটা বোঝান।
মা-বাবা এবং ডাক্তার ছাড়া আর কেউ সেই অঙ্গ ছুঁতে পারে না, এই ধারণা তৈরি করুন।
কোনও রকম অস্বস্তিতে বাচ্চাকে বাধা দিতে শেখান, প্রয়োজনে চিৎকার করে প্রতিরোধ করতে বলুন।
গল্পের ছলে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করুন, শিশুর উপর কোনও অত্যাচার হচ্ছে কি না।
সতর্ক থাকবেন যাদের থেকে
বাচ্চা না-চাইলেও কেউ যদি জোর করে আদর করতে চায়।
কেউ যদি আড়ালে গিয়ে বাচ্চার সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করে।
কেউ যদি উপহার এনে বা লোভ দেখিয়ে বাচ্চাকে সকলের কাছ থেকে আলাদা করার চেষ্টা করে।