নয়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সারা ভারত জুড়ে চলছে চলছে উত্তাল; বিক্ষোভ। সিএবি থেকে সিএএ’তে পরিণত হয়েছে এমনকি এই আইন সারা দেশজুড়ে কার্যকর হওয়ার পরও বিক্ষোভ থামছে না।
বিক্ষোভ পরিস্থিতি সামলানোর জন্যে এবং আস্থা প্রকাশের জন্যে বারবার ঘোষণা করে চলেছে সরকার পক্ষ যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কোন সম্প্রদায় বা ধর্মের ভিত্তিতে করা হয়নি। শুধুমাত্র বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান থেকে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, শিখ যারা ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন তাঁদের নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে।
তবে প্রকাশের মাত্রা উচ্চ করে বিপত্তি বাঁধিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
রবিবার চেন্নাইয়ে সিএএ নিয়ে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন নির্মলা। অনুষ্ঠানে তিনি বিদেশিদের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত তথ্য-পরিংসংখ্যান তুলে ধরেন।
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ২০১৬ থেকে ২০১৮ মোট দু’বছরে আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসা ৩৯১ জন মুসলিমকে নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়েছে। পাকিস্তানের শরণার্থী হিসেবে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে ১৫৯৫ জনকে। এই সময়ের মধ্যেই আদনান সামিকে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে, সেটিও একটি উদাহরণ।
এবং এর পরই ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদান করা নিয়ে বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখক তসলিমা নাসরিনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। সম্পূর্ণ মিথ্যে ভাষায় তিনি বলে গেলেন নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে তসলিমা নাসরিনকে!
উল্লেখযোগ্য যে, তসলিমা নাসরিন বছরের পর বছর ধরে নাগরিকত্ব নয়, শুধুমাত্র রেসিডেন্স পারমিটটি যেন একটু লম্বা সময়ের জন্যে প্রদান করা হয় ভারত সরকারের পক্ষ থেকে, তার জন্যে আবেদন জানিয়ে আসছেন।
২০১৯ সালের জুলাই মাসে তাঁর ভিসার মেয়াদ হিসেবে ৩ মাস বৃদ্ধি করা হয়েছিল। যেখানে তিনি চেয়েছিলেন ৫ বছরের। বাংলাদেশ থেকে মৌলবাদীদের অত্যাচারে বেড়িয়ে আসার পর তিনি পশ্চিম দেশের নাগরিক হলেও ভারত তসলিমার কাছে দ্বিতীয় বাংলা, প্রাণপ্রিয় একটি দেশ। একথা বারবার তিনি বলে আসছেন।
অবশেষে তসলিমাকে ৩ মাস থেকে ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করে ১ বছর করা হয়েছে। ২০২০ সালের আগামি জুলাই পর্যন্ত তসলিমা নাসরিনের জন্য ভারতে বসবাসের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সঙ্গে সঙ্গে নারীবাদী লেখক তসলিমা ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে টুইট বার্তায় বলেছিলেন, “সম্মানিত অমিত শাহজি, আমার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোয় আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পাঁচ বছরের ভিসা চেয়ে পেয়েছিলাম মাত্র তিন মাসের। আপনার জন্য সে মেয়াদ বাড়িয়ে এক বছরের করা হয়। এখন ভারতই আমার একমাত্র আবাস। আমি নিশ্চিত আপনারা আমাকে রক্ষা করবেন।”
প্রসঙ্গত, মানবতাবাদী লেখক তসলিমা নাসরিন ২০০৪ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ভারতে বসবাসের অনুমোদন মাত্র পাচ্ছেন। তা মোটেই নাগরিকত্ব নয়!
কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর এ হেন উক্তিতে স্বভাবতই চাপে পড়েছে বিজেপি।