সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি ইস্যুতে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হম্বিতম্বি অতিষ্ঠ করে তুলেছে বুদ্ধিমান জনসাধারণকে।
২০১২ সালে প্রকাশ কারাত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। এবং বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে আগত শরণার্থীদের ভারতে স্থান দেওয়ার কথা স্পষ্টভাবে চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন।
শুধু তাই নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ২০০৫ সালে স্বয়ং একই দাবি জানিয়েছিলেন। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল মমতা সে সময় চেয়েছিলেন।
তাহলে এত বছর পর কেন পরিবর্তন মমতার?
নাগরিকত্ব সংশধনী বিল রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের স্বাক্ষরে আইনেও পরিণত হয়ে গেছে। অথচ আমরা দেখছি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্রমাগত রাস্তায় নেমে এনআরসি এবং সিএএ বিরোধি ব্যাজ লাগিয়ে সাধারণ মানুষকে ক্ষেপিয়ে তুলছেন।
সরাসরি এই কথা নয়া দিল্লির রামলীলা ময়দান থেকেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছেন যে, “যে বিলের কথা বলে গেছেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, আজ আমি নরেন্দ্র মোদি সেটি কার্যকর করলেই দোষ?”
নয়া আইনে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান থেকে ধর্মীয় নির্যাতনের বলি হয়ে ভারতে আগত হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন ধর্মাবলম্বী লোকেদের নাগরিকত্ব প্রদানের কথা বলা হয়েছে। এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন, ভারতীয় মুসলমানদের আশংকার কোন কারণ নেই। তাঁরা প্রত্যেকেই ভারতীয় নাগরিক।
তাহলে যে মমতা একসময় বিলের স্বপক্ষে ছিলেন, সে মমতা আজ চিৎকার করে গলা ফাটাচ্ছেন। নাগরিকত্ব আইন তিনি চান না।
‘‘ওরা বিভাজনের রাজনীতি করছে। ওদের ফাঁদে পা দেবেন না’’। মমতা বলেন।
আসলে বিভাজনের রাজনীতিটা প্রকারান্তরে তিনিই করছেন না তো?
মমতার দু-রকম স্থিতি নিয়ে একটি কথা জলের মতো স্পষ্ট যে, তিনি রাজ্যের মানুষকে পরোক্ষভাবে নাগরিকত্ব হারানোর আশংকা দেখিয়ে ক্ষেপিয়ে তুলছেন জনগণকে। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বারবার বিভিন্ন মহল থেকে।
মমতা এ বিষয়গুলো এড়িয়ে যেতে পারবেন না কিছুতেই।
বিজেপি নেতা জে পি নাড্ডা বলেছেন ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদের (মতুয়া) নাগরিকত্ব কেড়ে নিচ্ছেন’’।
উল্লেখ্য, আজ মঙ্গলবার স্বামীজির বাড়ি থেকে বেলেঘাটায় গান্ধী ভবন পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিলের শুরু এবং শেষে মতুয়াদের প্রসঙ্গ টেনে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
মমতা বলেন, ‘‘মতুয়ারা নাগরিকত্ব পাবেন বলে নাকি মমতা বাধা দিচ্ছে! এসব কথা বলা হচ্ছে। মতুয়া ডেভেলপমেন্ট বোর্ড গড়েছেন মমতা। মতুয়া কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় মমতা গড়েছে। ৩০ বছর বড়মার চিকিৎসার খরচ বহন করেছে এই মমতা। মতুয়ারা এ দেশের নাগরিক। এসব আমাকে শেখাবেন না’’।