নয়াদিল্লি: ভারতে সমকামিতা অবৈধ নয়। যে কেউ সমকামী সম্পর্কে যেতে পারেন এবং তাদের সেই অধিকার আছে। সুপ্রিম কোর্ট আবারো এই বিষয়ে পরিষ্কার জানাল।
তবে সমকামীদের বিয়ের বিষয়টা নিয়ে এখনো না আছে।
প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিচারপতিরা সকলে এই বিষয়ে সম্মত হয়েছেন, সমকামী দম্পতিদের বিয়ে করার কোনও মৌলিক অধিকার নেই। বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে বলেছে, সমকামী বিবাহের বিষয়ে আইনসভার (সংসদ) সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
সুপ্রিম কোর্টের রায়কে অনেকেই ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্ট সমকামীদের বিয়েকে স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে , সমকামীতা বেআইনি।
তবে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে নাখোশ ভারতে বসবাস করা তসলিমা নাসরিন।
তিনি লিখেছেন, “দুজন মানুষ পরস্পরকে ভালবাসছে, তারা এক সঙ্গে থাকতে চাইছে। এ-ই কি যথেষ্ট নয় আইন তাদের কাপল বলে স্বীকৃতি দেবে? কী দরকার দেখার তাদের পোশাকের আড়ালে কোন ধরণের লিঙ্গ রয়েছে, তারা সেই লিঙ্গ দিয়ে কী করে সেক্স করবে!
যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে করুক, যা খুশি করুক। সেক্স না করুক। তারা যদি সুখী, আমরা কে যে বাগড়া দেব? তারা যদি অন্যের কোনও ক্ষতি না করে তাহলে তো কারও আপত্তি থাকার কথা নয়।
সমকামীরা শিশু জন্ম দেয় না? কে বলেছে দেয় না? আমার কিছু লেসবিয়ান কাপল বন্ধুকে দেখেছি তাদের গে বন্ধুদের স্পার্ম নিয়ে গর্ভবতী হতে, দেখেছি শিশু দত্তক নিতে। স্ট্রেইট মেয়েদের চেয়ে শিশুপালন তারা কিছু কম জানে না। বরং অনেক ক্ষেত্রে বেশিই জানে।
উভকামী, সমকামী, রূপান্তরকামী, বিষমকামী — সব কামীদেরই আছে নিজের পছন্দে জীবন যাপন করার অধিকার। সব কামীদেরই আছে নিজের পছন্দের মানুষের সঙ্গে শান্তিতে স্বস্তিতে বসবাস করার অধিকার। এই অধিকার ছিনিয়ে নেওয়াটা কোনও গণতন্ত্রের কাজ নয়।
আমি বিয়েতে বিশ্বাস করি না। বিয়ে একটা পুরুষতান্ত্রিক ইন্সটিটিউশান। কিন্তু কেউ যদি বিয়েতে বিশ্বাস করে, বিয়ে করতে চায়, আমি তার বিয়ে করার অধিকারকে ১০০ ভাগ সমর্থন করি। ঠিক যেমন কেউ বিয়ে করতে না চাইলে তার বিয়ে না করার অধিকারকেও ১০০ ভাগ সমর্থন করি। বিয়ে কারা করবে, বিয়ে করার পর তারা কী করে কী করবে, সেটা সম্পূর্ণ তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার।
ভারতের বিচারকদের উচিত ছিল সমকামী বিবাহকে লিগ্যাল করা”।