রূপান্তরকামী, সমকামি, নপুংসক ওরাও যে মানুষের রক্তে তৈরি, মাংস-মজ্জা দিয়ে সৃষ্ট আস্ত মানুষ এই সমাজ স্বীকার করতে লজ্জা পায়। রাগ হয়। তাঁরা অচ্ছুৎ সর্বকার্য থেকে!
কিন্তু এবার সমস্ত নিষেধাজ্ঞা দূরে ঠেলে এগিয়ে এলেন রুপান্তরকামীরা রক্তদানের জন্যে। ভারতের ইতিহাসে প্রথম রক্ত দান করল রূপান্তরকামীরা কলকাতায়। এ গর্ব বাংলার। এ গর্ব মানবজাতির।
মাতৃভূমি স্টুডেন্টস সোসাইটি’র উদ্যোগে ঐকান্তিক উদ্যোগে ‘বিশ্ব যুব দিবস’ উপলক্ষে মহর্ষি দেবেন্দ্র রোডে রক্তদান শিবির আয়োজন করা হয়েছিল।
সেখানে মনের আনন্দে মানবজীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ কাজটি করার জন্যে এগিয়ে এলেন এলজিবিটি সম্প্রদায়ের মানুষরা। সম্ভবত ভারতে প্রথম এমন উদ্যোগ নেওয়া হল। লায়ন্স ব্লাড ব্যাঙ্কের তরফ থেকে তাঁদের মানবতার রক্ত সংগ্রহ করা হয়েছে।
ভারতের ন্যাশনাল এইডস কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন এবং ন্যাশনাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন কাউন্সিলের নিয়ম অনুযায়ী, রক্ত দিতে পারেন না রূপান্তরকামীরা। ধারণা তাঁদের অধিকাংশই এইচআইভি আক্রান্ত! অন্যদিকে সমাজের দৃঢ় অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার তো রয়েছেই। যা মানুষকে অন্ধকার থেকে মাথা তুলতে দিচ্ছে না দিনের পর দিন।
এলজিবিটি সম্প্রদায়ের মানুষ শুধু ভারত নয়, সারা পৃথিবীতেই রক্তদানের ওপর জারি রয়েছে নিষেধাজ্ঞা।
সেই জগদ্দল পাথর সরানোর জন্যে ইন্টারন্যাশানাল রেড ক্রস সোসাইটি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে যে কীভাবে এই সম্প্রদায়ের মানুষদের রক্তদানে যুক্ত করা যায়!
সেই উদ্যোগে ভারতের পক্ষ থেকে প্রথম পদক্ষেপ এই রক্তদান শিবির।