নারী ধর্ষণ, নারী নির্যাতন ভারতে অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই নিয়ে সম্প্রতি যুক্তরাজ্য আর যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাগরিক, যারা ভারত ভ্রমণ করতে ইচ্ছুক, তাদের বিশেষ করে মেয়েদের সাবধান করে দিয়েছে যে ভারতে ধর্ষণ, খুন প্রচণ্ড বেড়েছে, পর্যটক মেয়েদেরও ছাড় দিচ্ছে না, সুতরাং ভারত ভ্রমণ থেকে বিরত থাকাই ভালো।
হায়দরাবাদের পশু চিকিৎসক প্রিয়াংকা রেড্ডির ধর্ষণ এবং নৃশংস খুন কাণ্ডের পর এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ নারীর পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি প্রদান করছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
প্রতিশ্রুতির পদ্ধতি হিসেবে একাংশ পুরুষ বেছে নিয়েছে কিছু মোবাইল নং। এই নম্বরগুলো দিয়ে তাঁরা যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখছে স্থান-কাল নির্বিশেষে কোন মেয়ে পুরুষের আক্রমণের বলি হলে সেই রক্ষাকর্তারা এগিয়ে আসবেন একটি মাত্র ফোনেই।
এমন হাজারো স্ট্যাটাসে ভরে গেছে ভারতের অসমসহ পশ্চিমবঙ্গ এবং অন্যান্য রাজ্যসমূহে।
কিন্তু আদৌ কতটুকু সত্যতা রয়েছে এই প্রতিশ্রুতির?
দেখে নিন, এবং সাবধান হয়ে যান।
একটি বিজ্ঞাপন ছিল এমন কলকাতার জনবহুল রাস্তায় একা মহিলাকে একেবারে নিখরচায়, নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেবে পুলিশ। সময় রাত দশটা থেকে সকাল ছ’টা।
সঙ্গে দেয়া হয়েছিল দুটো জরুরিকালিন ফোন নম্বর।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিজ্ঞাপন প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে পালটা বিবৃতি দিয়ে কলকাতা পুলিশ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, এমন কোনও কর্মসূচি তাদের এখন অবধি নয়। নিখরচায় বাড়ি পৌঁছে দেওয়ায় বিজ্ঞাপন ডাহা মিথ্যে। বরং তারা সবসময়েই নারীদের সুরক্ষায় অত্যন্ত তৎপর রয়েছেন। তবে এমন বিজ্ঞাপন তাঁদের নয়।
কলকাতা পুলিশের এমন স্পষ্টিকরণ থেকে এই কথা আরো একবার খুব ভালোভাবে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, পুরুষরা সমাজে রক্ষকের মুখোশে কতভাবে ভক্ষকের ভূমিকা পালন করছে। ধর্ষক তো তিনিই নন, যিনি শরীরে শরীর লাগান, তিনিও ধর্ষক যিনি প্রকারান্তরে ধর্ষককে জল, ফুল দিয়ে বিকাশে সাহায্য করছেন।
ধর্ষণের মূল কারণ তথা পুরুষতন্ত্রকে বিলোপ করার জন্যে কোনরকম আন্দোলন গড়ে তুলতে দেখা যাচ্ছে না নৃশংস কাণ্ডগুলো বারবার ঘটে যাবার পরও। অথচ রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে নির্যাতিতাকে ফের নির্যাতনের জন্যে প্রস্তুত হয়ে পড়েছে বিকৃতকাম পুরুষরা।
আপনারা নারীরা সাবধানতা অবলম্বন করুন। সোশ্যাল মিডিয়ায় অথবা অন্য কোথাও লাগানো এমন বিজ্ঞাপনের ফাঁদে কখনো পা দেবেন না। সত্য মিথ্যা যাচাই করুন আগে।
বরং নিজেরা কোমর বেঁধে মার্শাল আর্ট, জুডো শিখে নিজে লড়াই করতে শিখুন শারীরিক এবং মানসিক দিক দিয়ে স্বাধীনভাবে।