ভারতে এনআরসি নামক যে বিষ ছড়ানো হয়েছে তা কোনমতেই মেনে নেবে না পশ্চিমবঙ্গের জনগণ। রবিবার প্রতিবাদী কার্যসূচীতে হুংকার দিয়ে বিজেপিকে জানিয়ে দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের সাবেক তৃণমূল বিধায়ক গোপাল শেঠ।
রবিবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাগদায় এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি এই মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, অসমে জাতীয় নাগরিক নাগরিকপঞ্জি তালিকা থেকে বাদ গেছে ১৯ লক্ষ মানুষ। এমনও দেখা গেছে লিগেসি ডাটা কিংবা অন্যান্য বৈধ ভারতীয় কাগজপত্র দিয়েও তাঁরা নিজেদের নাম এনআরসি তালিকায় উঠাতে সক্ষম হননি।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে অসমের মন্ত্রী এখন মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
বিজেপি অসমের পর আবার বাংলাতেও এনআরসি করার ছক কষছে।
এদিন গোপাল শেঠ বলেছেন, ‘রাজ্যবাসীর সামনে এক সমূহ বিপদ আসছে। দলমত নির্বিশেষে সবাইকে বলছি, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) নামক বিষ গোটা ভারতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাঙালিদের উৎখাত করার চেষ্টা হচ্ছে। এজন্য প্রত্যেককে শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়াতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনআরসির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। উনি প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন বাংলায় কোনোভাবেই এটা চালু করবেন না।’
তিনি পশ্চিমবঙ্গের জনতার উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছেন, প্রকারান্তরে তিনি বলতে চেয়েছেন দেশের মানুষের এই দুঃসময়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জীর পাশে যেন সকলে একত্রিত থাকেন। নির্বাচনের বিষয় সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত মতামত। কিন্তু এখন সকলকে একজোট হয়ে লড়াইয়ে নামতে হবে।
তিনি বলেন, ‘ভোটে কে কি করবেন সেটা পরের ব্যাপার। কিন্তু এই আন্দোলনে আমাদের সকলের যুক্ত থাকতে হবে। নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু ডাক দিয়েছিলেন, তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো। একইভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, তোমরা আমার সঙ্গে পায়ে পায়ে হেঁটে চলো, আমি তোমাদের এখানে এনআরসি বন্ধ করে দেবো। আসুন আমরা সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে দলমত নির্বিশেষ প্রতিবাদে গর্জে উঠি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখি।’
উল্লেখযোগ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্যামবাজারে সম্প্রতি এক জনসভার বক্তৃতায় গেরুয়া শিবিরের উদ্দেশে বলেছেন, আরেকটা বঙ্গভঙ্গ হতে দেবেন না তিনি কখনোই।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে আলোচনাকালে মমতা ব্যানার্জী অসমের এনআরসি থেকে বাদ যাওয়া ১৯ লক্ষ জনগণের পক্ষে কথা বলেছেন। এই মর্মে একটি অফিসিয়াল চিঠিও মন্ত্রীকে দিয়েছেন।