দ্বিতীয়বার কন্যাসন্তান হওয়ায় দেড়মাসের শিশুকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠল বাবা-সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জ থানার মৌশুনির কুসুমতলা গ্রামে।
খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শিশুটির বাবা, ঠাকুরদা, ঠাকুমা ও পিসিকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে মৌশুনির বালিয়াড়ার বাসিন্দা কাকলির সঙ্গে বিয়ে হয় কুসুমতলার বিদ্যাধরের। বিয়ের একবছর পর তাদের একটি কন্যাসন্তান হয়। প্রথম সন্তান মেয়ে হওয়ার পর থেকেই সংসারে অশান্তি শুরু হয়।
অভিযোগ, শ্বশরবাড়ির সদস্যরা নিত্য গঞ্জনা করতে শুরু করে কাকলিদেবীকে।
এর বছরখানেক পর ফের অন্তঃসত্ত্বা হন কাকলি দেবী। দ্বিতীয়বারও কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। এরপরই বাড়তে শুরু করে অশান্তি। সদ্যোজাতকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা ওই বধূর উপর অত্যাচারের মাত্রা বাড়তে শুরু করে বলে অভিযোগ।
সব সহ্য করেও প্রায় দেড়মাস দুই মেয়েকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতেই ছিলেন কাকলিদেবী।
সূত্রের খবর, সোমবার গভীর রাতে কাকলিদেবী যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, সেই সময়ই তাঁর পাশ থেকে দেড়মাসের শিশুকন্যাটিকে তুলে নিয়ে যায় বিদ্যাধর, তার বাবা-মা ও বোন।
অভিযোগ, বাড়িতেই ওই চারজনে মিলে শিশুকন্যাটিকে শ্বাসরোধ করে খুন করে।
মঙ্গলবার সকালে ঘুম ভেঙে কাকলিদেবী দেখেন তাঁর পাশেই অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছে শিশুটি। তার নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। এরপরই চিৎকার করেন তিনি। তাঁর কান্না শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে যান। তারাই শিশুটিকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, শ্বাসরোধের কারণেই মৃত্যু হয়েছে শিশুকন্যাটির।
ঘটনার খবর পেয়ে ছুটে যান কাকলিদেবীর বাবা। তাঁর অভিযোগ, খুন করা হয়েছে ওই সদ্যোজাতকে। এরপরই অভিযুক্তদের বেধড়ক মারধর করেন স্থানীয়রা। এরপর ওই মহিলার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে শিশুটির বাবা, ঠাকুরদা, ঠাকুমা ও পিসিকে আটক করে পুলিশ।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি জানান, ওই দম্পতির দ্বিতীয়বারেও কন্যাসন্তান হওয়ায় শিশুটিকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। অভিযুক্ত চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।