মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতির খেলায় এমনভাবে মেতে উঠেছেন যে, সারা দেশ যখন চন্দ্রযান ২ এর অবতরণের অপেক্ষায় অপেক্ষমান, আনন্দে আত্মহারা দেশের গর্বে, ঠিক সে সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কটাক্ষ করা শুরু করলেন নরেন্দ্র মোদিজির।
শুক্রবার সকালে তিনি বলেছিলেন, “দেশের আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরানোর জন্য চন্দ্রযান-২ অভিযানের প্রচার চালানো হচ্ছে।দেশে এ ধরনের মহাকাশ অভিযান নতুন নয়। তবে এখন এই অভিযান নিয়ে বিজেপি যেভাবে প্রচার চালাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে সব কৃতিত্ব বিজেপির। তিনি বলেন, সব কৃতিত্ব ওরা (বিজেপি) একাই নিতে চায়। এখন বিজেপি চাঁদ দেখাচ্ছে। জনগণের কাজ না করে শুধু রাজনীতি করছে। ৬০ থেকে ৭০ বছর ধরে গবেষণা চলছে। আর এখন ওরা হঠাৎ করে বলছে ওরাই সব করছে। বিজ্ঞান, আকাশ, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ সবই নাকি ওদের কৃতিত্ব। যেন মহামানব এসে গেছে! বিজেপি নেতারা যাক। চাঁদে গিয়ে ফ্ল্যাট বানিয়ে থাকুক।”
শুধু কি চন্দ্রযান ২? মধ্যযুগীয় অত্যাচার থেকে যে মুসলমান নারীরা মুক্তি পেয়েছে, তিন তালাক তুলে দেয়া হয়েছে চিরদিনের জন্যে, পরাধীন কাশ্মীরবাসী স্বাধীনতার আস্বাদ পেয়েছে ৩৭০ ৩৫এ ধারা তুলে দেয়ায়। সেখানেও মমতার কটাক্ষের অন্ত ছিল না।
মমতা চেয়ার দখলের লড়াইয়ে ভুলে গেছেন দেশকে। তাঁর কাছে বড় হয়ে উঠেছে নিজের মুক্তি। কিন্তু অসংখ্য মানুষের মধ্যে থেকেই যে মুক্তি আসে, তা তাঁর জানা নেই। জনসংযোগ বৃদ্ধি করার জন্যে আলাদা কোন সূত্রের প্রয়োজন হয় না। দেশপ্রেমী হওয়া চাই, দেশের গৌরবে নিজেকে গৌরবান্বিত করা চাই!
রাজ্যের একজন মুখ্যমন্ত্রী, তিনি কি দেশের কেউ নন? দেশের আনন্দে কি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করে নিজেকেই ছোট করছেন?
এই তাঁর জনসংযোগ বৃদ্ধি? রাজনীতি মহল উত্তেজিত মুখ্যমন্ত্রীর এমন বার্তায়।
এদিকে চন্দ্রযান ২ শুক্রবার ভারতীয় সময় রাত দুটোয় চাঁদের পৃষ্ঠ স্পর্শ করার কথা ছিল। কিন্তু, দুর্ভাগ্যজনকভাবে তার আগেই নিয়ন্ত্রণকক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় চন্দ্রযান–২–এর! বিজ্ঞানীদের পরম যত্নে পিঠে হাত দিয়ে ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাবার জন্যে আত্মবিশ্বাসে ভরিয়ে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
এদিকে তখনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজ্ঞানীদের সাফল্যে কুর্ণিশ করেছেন। ব্যর্থ হলেও তাঁদের কঠোর পরিশ্রমের কথা স্বীকার করে ট্যুইট করলেন।
A testimony to the scientific temper they ingrained in us, and their unmatched caliber and dedication. My sincere gratitude and congratulations to @isro . We are all with you. May you continue to make us proud! (2/2)
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) September 7, 2019
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে পদ্মফুলের ভয়ে কাটা হয়ে আছেন। এমনও চারদিকে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, তাঁর হ্যালুসিনেশন হচ্ছে! চারদিকে বিজেপি দেখছেন।
রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ তৃণমূল সুপ্রিমোকে তীব্র কটাক্ষ করে বলেছেন, “ঠাকুর ওঁকে সৎবুদ্ধি দিক। কোনও ভালো তো উনি চান না। সব ব্যাপারে বাগড়া দেন। ৩৭০ ধারা তুলে দিলে ওঁর কষ্ট, তিন তালাক বাতিলে ওঁর কষ্ট, চন্দ্রযান পাঠালে ওঁর কষ্ট। ওঁর কীসে আনন্দ, তা বুঝতে পারলাম না।”