আর মাত্র বাকি ১২ দিন। প্রকৃতি জানান দিচ্ছে দুর্গা আগমণের। কিন্তু অসমসহ পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মনে নেই কোন আনন্দ। জাতীয় নাগরিক পঞ্জি থেকে বাদ যাওয়া ১৯ লক্ষ মানুষ মুখে গ্রাস তুলতে পারছেন না। রাষ্ট্রহীন হবার আতংক কুরে কুরে খাচ্ছে ১৯ লক্ষকে।
ওদিকে তৃণমূল সুপ্রিমো যতই আশ্বস্ত করুন পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি হবে না, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিংবা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বাংলার এনআরসি করা নিয়ে কোন আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।
কিন্তু এনআরসি ভূত তাড়া করছে বাংলার মানুষকে। জমির দলিল এবং ভারতে বসবাসের নথি জোগাড় করতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছে মানুষের।
এমনই ঘটনাগুলোতে কালঘাম ছুটে যাচ্ছিল বসিরহাটের মণ্টু মণ্ডলের। শনিবার দলিলের কাগজপত্র নিয়ে বেরোতে যাবেন হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হন মন্টু বাবু। চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবার আগেই চিরদিনের মতো চলে গেলেন তিনি।
মন্টু মণ্ডলের ভাই সাহিবুল মণ্ডল বলেন, ‘মন্টুর মৃত্যুর একমাত্র এনআরসি। এনআরসি নিয়ে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে এলাকায়। মন্টু তাঁর নথি জোগাড়ের জন্য পঞ্চায়েত, বিডিও অফিসে ছোটাছুটি করছিলেন। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। সেই দুশ্চিন্তায় মন্টুর মৃত্যু হয়েছে।’
মৃতের স্ত্রী মিনারা বিবি জানিয়েছেন পরিবারের মর্মান্তিক কথা, ‘কয়েকদিন কোনও কাজ নেই। রোজ সকালে মানুষটা পাগলের মতো কাগজপত্রের জন্য একবার এখানে, একবার ওখানে দৌড়চ্ছেন। এদিন সকালে বিডিও অফিসে যাবেন বলে বেরোচ্ছিলেন। ঘরে খাবার কিছু নেই। বাচ্চাগুলোর মুখে কী দেব? খুবই দুশ্চিন্তা নিয়ে দিন কাটচ্ছিলেন মানু্্ষটা। আজ বেরোবার সময় বুকে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার আগেই সব শেষ!’
পুজোর সমস্ত আনন্দ ভুলে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ আশংকা, বিভ্রান্তির মাঝে দিন কাটাচ্ছে। সরকারিভাবে এই বিভ্রান্তি, আতংক দূর করার দাবী জানাচ্ছে অঞ্চলের মানুষ।