“আরেকটা বঙ্গভঙ্গ করার চেষ্টা করবেন না, আরেকটা দেশভাগ করার চেষ্টা করবেন না। আগুন নিয়ে খেলবেন না, পুড়ে ছাই হয়ে যাবেন। কেউ কাউকে বাঁচায় না, নিজেদের নিজেই বাঁচাতে হয়।”
বৃহস্পতিবার বাংলায় কেন্দ্রীয় সরকারের নাগরিকপঞ্জিকরণ উদ্যোগের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেশভক্তিমূলক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘বন্দেমাতরম’ ধ্বনি কাঁপিয়ে দিয়েছে আকাশ-বাতাস।
‘ধিক্কার ধিক্কার, এনআরসি কে ধিক্কার” এদিন পদযাত্রার শেষে শ্যামবাজারে প্রতিবাদী বক্তব্য রাখলেন মমতা।
মমতার ভাষণে এদিন যেমন উত্তেজনা ছিল, তেমনই ছিল রসিকতা। অর্থাৎ তিনি যে ভয় পাচ্ছেন না, তা পরিষ্কার।
উত্তেজনাবশে ভুল করে বসলেন বৌদ্ধধর্মের ত্রিশরণ মন্ত্র! “বুদ্ধং শরণং গচ্ছামিঃ ধম্মং শরণং গচ্ছামিঃ সঙ্ঘং শরণং গচ্ছামি”।
মমতা “ধম্মং” এর স্থানে রীতিমতো বলে বসলেন “শান্তিং শরণং গচ্ছামি”! কি আশ্চর্য!
"বাংলায় এনআরসি করতে দেব না" গর্জে উঠলেন জননেত্রী
শুনুন আজ শ্যামবাজারে দিদির পুরো বক্তব্য #NoNRCinBengalhttps://t.co/yMOCvuHXpk
— All India Trinamool Congress (@AITCofficial) September 12, 2019
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বিজেপি দলকে ধ্বংসকারী ‘অসুর’ বলে সম্বোধন করে এদিন বলেন, “দুর্গা পুজা আসন্ন। আমরা একত্রে অসুর নিধনের জন্যে মা দুর্গা রূপে আবির্ভূত হবো।”
“আন্দোলনে আমরা ভয় পাই না। আমরা তৈরি আছি। বাংলার সংস্কৃতিকে অপমান করছে বিজেপি। আর বাংলার সংস্কৃতিকে অপমান করা মানেই হল দেশকে অপমান করা।”
বাংলার সংস্কৃতিকে অপমান করছে বিজেপি, এই অপমান আর সহ্য করা হবে না। জানিয়ে দিলেন মমতা।
বাংলায় এনআরসি কোনমতেই করতে পারবে না বিজেপি। কারণ তারা এনআরসির মাধ্যমে বাঙালিকে টার্গেট করে নিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী সভামঞ্চ থেকে বলেন, স্বাধীনতার ৭২ বছর হয়ে গেছে, এখন প্রমাণ দিতে হবে যে আমি ভারতীয় নাগরিক?
তিনি ৩১ শে আগস্ট অসমে প্রকাশিত নাগরিকপঞ্জির ঘাটতির কথা উল্লেখ করেছেন। যে তালিকা থেকে বাদ গেছে ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৬৫৭জন নাগরিকের নাম ।
তাঁদের মধ্যে বাঙালি হিন্দু ১২ লক্ষ, ১ লক্ষ গোর্খা এবং হিন্দিভাষীও রয়েছে। তারা প্রকৃত নাগরিকত্বের প্রমাণ-পত্র দিয়েও নাগরিক হতে পারেনি।
এই নীতি বাংলায় চলবে না। অসম আজ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। সারা ভারতবর্ষ জুড়ে হাহাকার চলছে।
এমন ঘটনা যে ঘটবে বিজেপি কখনো ভাবতে পারেনি। ফের ভোটের আশংকা শুরু হয়ে গেছে তাঁদের। যে প্রতীক হাজেলাকে পূজা করাটুকু বাকি ছিল তাঁদের, এবার তিনিই হয়ে গেলেন ভিলেন!
রাজ্য বিজেপি মনে করেছিল, বাদ পড়াদের তালিকায় মূলত সংখ্যালঘুদের নাম থাকবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ঠিক তার উল্টো। যাঁরা বাদ পড়েছেন, তাঁদের অর্ধেকের বেশি হিন্দু, গোর্খা এবং স্থানীয় আদিবাসী সমাজের লোক। এঁদের নাম এনআরসি থেকে বাদ পড়ার ফলে আগামিতে দলের হিন্দু ভোট-ব্যাঙ্ক ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা করছেন অসমের বিজেপি নেতারা।
তিনি চিরশত্রু গেরুয়া দলের বিরুদ্ধে হুংকার দিয়ে বললেন, ” যারা বাংলায় আছে, তাঁরা সকলেই বাংলার নাগরিক, ভারতীয় নাগরিক। বাংলার মানুষ কেউ মাকে আম্মি বলছে, কেউ মাদার বলছে। বাংলার মানুষের টেলেন্ট, বাংলার সংস্কৃতি ভাঙার ক্ষমতা থাকলে দেখান সেই ক্ষমতা?”
বিএসএনএলের কর্মীরা দীর্ঘ ৭ মাস ধরে মাইনে পাচ্ছে না। ভারতবর্ষের অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙে পড়েছে। কিন্তু কেউ কথা বলতে পারছে না।
তিনি অভিযোগ জানান, রাজনৈতিক ফায়দা তুলতেই এই পঞ্জিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি এও জানান, যাঁরা নাগরিক পঞ্জির জন্য ভুগছেন, তিনি তাঁদের পাশে রয়েছেন।