কথায় বলে ‘কারো পৌষমাস কারো সর্বনাশ’। হ্যাঁ, অসময়ে এমনটাই পরিস্থিতি হয় দেশ-বিদেশের বিখ্যাত একটি স্থান কলকাতার কুমোরটুলিতে।
দেশ-বিদেশ বলাটার কারণ, কুমোরটুলিতে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মূর্তি গড়া নয়, সেখান থেকে মৃৎশিল্পীরা রাজ্যের বাইরে এমনকি বিদেশে গিয়েও মূর্তি গড়েন।
বাঙালির বারো মাসে তের পার্বন হলেও কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীরা সম্ভবত দুর্গাপুজোর মরশুমে ব্যস্ত থাকেন। বাকি সময়ে বলতে গেলে বাজারটা মন্দাই থাকে।
তবে, ইদানীং এক ব্যতিক্রমী চিত্র ধরা পড়ছে কুমোরপাড়ায়। অফ সিজনে মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে দেখা যাচ্ছে ক্রমশ।
কারণ, কুমোরটুলিতে বিদ্যাসাগরের মূর্তি গড়ার হিড়িক পড়েছে।
কিছু দিন আগেই বাঙালি জাতিকে উস্কে দিয়ে তপ্ত হয়েছিল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট। বিদ্যাসাগর কলেজে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনায় সমগ্র দেশ জুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল।
একদিকে যখন মূর্তি ভাঙা নিয়ে রাজনীতি চলছে, অন্যদিকে চলছে, কুমোরটুলিতে বিদ্যাসাগর সহ নানা বাঙালি মনীষীর মূর্তি গড়ার যুদ্ধ।
বিদ্যাসাগরের মূর্তি তৈরি করতে চেয়েই একাধিক বায়না আসছে রোজ।
বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদে কলকাতার বহু সংস্থা তাঁদের ক্লাব প্রাঙ্গণে বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই কুমোরটুলিতে বায়না নিয়ে এসেছেন।
কারোর মতে, বাঙালিয়ানা মুছে ফেলতে কেউ কেউ উঠেপড়ে লেগেছেন। এই আস্ফালনের জবাব হিসাবে একাধিক মূর্তি বসানোর পণ করেছে।
আবার কেউ কেউ আবেগে, বাড়ির দেওয়ালে বিদ্যাসাগরকে রাখার জন্য শোলার মূর্তি গড়ার বায়না নিয়ে এসেছেন।
মৃৎশিল্পীদের কাছে এই সময়টা খরার মরসুম। অসময়ে কাজ পাওয়া কুমোরটুলির শিল্পীদের কাছে অবশ্যই বড় খুশির খবর।