একের পর ধ্বস নামছে বাড়িগুলোতে। ফাটল দেখা যাচ্ছে, আর পরক্ষণেই ধুলো উড়িয়ে চোখের নিমেষে ধ্বসে পড়ছে বাড়িগুলো!
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের গাফিলতিতে বৌবাজারের বিপর্যয় বেড়েই চলেছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে গৃহহীনের সংখ্যা।
আতংকে দিন কাটছে না এলাকার বাসিন্দাদের। ক্ষতিগ্রস্তদের হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে, কিন্তু সেখানে তাঁরা রয়েছেন যেন যাযাবর। তাঁদের খাওয়া-দাওয়া, এমনকি বিশুদ্ধ পানীয়ের পর্যন্ত অভাব সেখানে!
প্রায় ১৮টি বাড়ি ধ্বসে গেছে, ৩০০ জনের ওপর মানুষ গৃহহারা। এদিকে এলাকার আরো ২০ টি বাড়িকে নতুনভাবে বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্ণিত করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে দুর্গা পিতুরি লেন, সেকরাপাড়া লেনের পরে এ দিন পাশের গৌর দে লেনের বিভিন্ন বাড়ি থেকেও বাসিন্দাদের সরিয়ে দেওয়া হয়।
এদিকে ফাটল দেখা দেয়া সেকরাপাড়া লেনের ৯ নম্বর বাড়ির অধিকাংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে! সিঙ্গাপুর থেকে আসা সুড়ঙ্গবিদ জন ব্রিজ ক্রিস্টোফার এবং মুম্বই থেকে আসা ভূতত্ত্ববিদ মণীশ কুমার সেকরাপাড়ার লাল রং দিয়ে বিপজ্জনক ঘোষণা করেছেন ৬এ, ৬এ/১, ১০/২, ৭এ, ৭বি, ৮এ, ৮বি, ৯, ১০, ১০/১, ১১, ১২, ১৩ বাড়িগুলোকে।
অন্যদিকে, দুর্গা পিতুরি লেনের ২, ৩, ৪, ৫, ৬ এ এবং ৬এ/১ নম্বর বাড়ি লাল রঙের আওতায় রাখা হয়েছে। যে কোন মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে।
সেকরাপাড়া লেনের ৯ নম্বর বাড়িটি থেকে প্রাণ প্রিয় কুকুর গুলোকে বের করতে সমর্থ হলেও বের করা যায়নি পোষা প্রায় ৭০টি বিদেশি প্রজাতির পাখি। আটকে পড়েছিল অবলা পাখিগুলো। সেখানেই মারা যায় তারা। মর্মান্তিক! এ দৃশ্য সহ্য করা যায় না।
বৌবাজার বিপর্যয়ে আপৎকালীন ক্ষতিপূরণের জন্য
মঙ্গলবার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো রেলের উপর চাপ সৃষ্টি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, এককালিন সাহায্য হিসেবে তাঁদের ৫ লক্ষ টাকা করে দিতে হবে। ঠিক তার পরের দিনেই ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হলেন মেট্রো-কর্তৃপক্ষ। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, এই বার্তা রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
আজ, বৃহস্পতিবার বৌবাজারের হাহাকারমূলক পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের কমিটির বৈঠকে নিরাপত্তা-সমীক্ষার পক্ষে ফের সওয়াল করতে পারে রাজ্য।