“মরণকে সে ভয় করে না, জ্ঞানীর সভায় ভয়,- ভাবের সাথে ভাব করে সে অভাব করে জয়।” বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজি নজরুল ইসলামের আজ ২৭শে আগস্ট ৪৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী। চোখের জলে ‘বিদ্রোহী’র অনুপ্রেরণায় দু-বাংলার মানুষ স্মরণ করছে নজরুলকে।
নজরুল ইসলাম ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক।সব্যসাচী প্রতিভার অধিকারী ছিলেন তিনি।
বাংলা সাহিত্য, সমাজ, সংস্কৃতির এক অনন্য শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি।
এপার-ওপার দু বাংলাতে তাঁর কবিতা-গান সমানভাবে সমাদৃত।
ভারত ও বাংলাদেশ এর মধ্যে যে বিভাজন তা শুধু দুটো দেশের মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া।কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা ও বাঙালির সাথে মিশে থাকা অন্তপ্রাণ এক অস্তিত্ব।
বাংলাদেশে আওয়ামি লিগের পক্ষ থেকে গভীর শ্রদ্ধার সহিত স্মরণ করা হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে নজরুলের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় কবি হিসেবে গেজেটের মাধ্যমে স্বীকৃতির চেয়ে বাস্তবে কর্মের মাধ্যমে কাজী নজরুল ইসলামকে ধারণ করাই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রত্যেকে কর্মে জাতীয় কবি হিসেবে তাঁর চেতনাকে ধারণ করছি, তাঁর স্বপ্নকে ধারণ করছি- এটাই বড় কথা।’
“কেন বৃথা এ পন্ডশ্রম, মগজে হানিছ শুল, কেন দোকানে এ দরকষাকষি, পথে ফোটে তাজা ফুল”। নজরুল ইসলাম গালাগালিকে গলাগলিতে পরিণত করতে চেয়েছিলেন।
বিদ্রোহী কবির নাতনি অনিন্দিতা কাজি স্মৃতিচারণ করেছেন দাদুর। নস্টালজিক হয়ে বললেন,
“একদিন দাদু খেতে বসেছেন। এক ভদ্রলোক এসেছেন মেয়ের বিয়ের জন্য কিছু সাহায্যের আশায়। শৈলজানন্দ তখন আড্ডা দিচ্ছিলেন তাঁর সঙ্গে। ড্রয়ার ঘেঁটে দশ টাকার নোট এনে দাদু তুলে দিলেন সেই কন্যাদায়গ্রস্ত বাবার হাতে। নিজের সংসার কালকে কী ভাবে চলবে, তখন কিন্তু জানেন না দাদু। অর্থাভাব তাঁর নিত্যসঙ্গী ছিল, কিন্তু মানুষের জন্য নিজের শেষটুকু বিলিয়ে দিতেও পিছপা হননি কখনও,” এমনই তিনি!
‘বিদ্রোহী কবি’-র আড়ালে থেকে যাওয়া শিশিরভেজা ঘাসের মতো কোমল মনের ছান্দিক মানুষ নজরুল ইসলাম।