ফের পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি রাজ্যসভাপতি পদে নিযুক্ত হলেন দিলীপ ঘোষ। গদিতে পুনর্বহাল হলেন দিলীপবাবু।
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে বিজেপি রাজ্য সভাপতি নির্বাচন সম্পাদিত হয়।
দ্বিতীয়বারের জন্যে ফের ক্ষমতায় এসে দিলীপ বাবু বললেন,’আগের বার অমিত শাহ আমার মতামত না-নিয়েই আমার নাম ঘোষণা করেছিলেন। আমি জানতামই না কাকে রাজ্য সভাপতি বলে। ৩ বছর সময় দিয়েছিলেন আমায়। এক বছর বোনাস পেয়েছি। ৪ বছর ধরে রাজ্য সভাপতি হওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি কিছু করতে পেরেছি, সে জন্য দল আবার আমায় দায়িত্ব দিয়েছে। প্রথমবার দায়িত্ব নিয়েই নির্বাচনে লড়তে হয়। মানুষ আমায় বিধায়কও বানিয়ে দিল। সবাইকে ধন্যবাদ।’
অমিত শাহের ভরসায় নির্বাচিত হলেও আখেরে বহুবার বহু বিতর্কিত মন্তব্য করে এই রাজ্য সভাপতি দলকে বিপাকে ফেলেছেন।
সম্প্রতি তিনি এনআরসি, সিএএ নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে ‘কুকুরের মতো মারব’ মন্তব্য করে দেশজুড়ে নিন্দিত হয়েছেন। এমনকি অসমের জনগণও রাজ্য সভাপতির প্রতি ক্ষেপে উঠেছে।
বিরোধি দলই যে দিলীপ বাবুর কটু এবং অনভিপ্রেত মন্তব্যে ক্ষেপে উঠেছে তা নয়। আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় দিলীপ ঘোষের আপত্তিজনক বার্তায় ক্ষেপে উঠেছেন। তুমুল সংঘাত ঘরের ভিতরেই।
বাবুল সুপ্রিয় ট্যুইট করে বলেছিলেন, দিলীপ ঘোষ একজন দায়িত্বজ্ঞানহীন মানুষ।
এমনকি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত রিটুইট করলেন বাবুলের টুইট। স্পষ্ট বোঝা গেছে, বাবুল সুপ্রিয় শুধু একাই নন। বিজেপি দলের মধ্যেই দিলীপ ঘোষকে না চাওয়া লোকেরা প্রচুর রয়েছে।
১৬ জানুয়ারি রাজ্য সভাপতির নির্বাচনে অনুপস্থিত ছিলেন আসানসোলের সাংসদ।
পরবর্তী সময়ে দ্বিতীয়বারের জন্যে নির্বাচিত দিলীপ ঘোষ সম্বন্ধে বাবুল বলেন, ‘রাজনীতি করতে গিয়ে মতের অমিল হতে পারে। এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আর জলঘোলা করার কোনও মানে হয় না। সব রাজনৈতিক দলেই বিরোধী মতের একটা জায়গা থাকা উচিত।’
তিনি আরো বলেন, ‘দেখা হলে দিলীপদা কি আমাকে জড়িয়ে ধরবেন না? একসঙ্গে চলতে গেলে অনেক কিছুই হয়। আমরা সবাই একটাই টিম। এটা বিতর্কের দিন নয়।’ তবে গুলি করা বক্তব্যের বিষয়ে এখনও নিজের জায়গা কিছুটা বজায় রাখছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। বলেন, ‘ফের সভাপতি হওয়ার জন্য ওঁকে শুভেচ্ছা জানাব। দ্বিতীবার সভাপতি হলেন উনি, এটা সামান্য বিষয় নয়। উনি যেটা বলেছিলেন, সেটা তাঁর ব্যক্তিগত মত। আমিও যেটা বলেছি সেটাও আমার নিজস্ব মত। মতের অমিল ফেলে আজ এগিয়ে যাওয়ার দিন।’
দ্বিতীয়বার রাজ্য সভাপতি হিসেবে যাত্রা শুরু করার পর বাবুলের এমন সুর নরম জনগণের মনে প্রচণ্ড বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। আসানসোলের এক বাসিন্দা জানাচ্ছেন, “রাজনীতিবিদরা নিজেদের মতে স্থির থাকতে পারেন না, পারবেন না কোনদিন। ফলে তাঁদের ওপর থেকে বিশ্বাস হারায় মানুষ।”