ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই ছোট সে তরী
আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি
শ্রাবণ গগন ঘিরে
ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে,
শূন্য নদীর তীরে
রহিনু পড়ি
যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী।
মহাকালের প্রতীক তরীতে কেবল সোনার ফসলরূপ মহৎ সৃষ্টিকর্মের স্থান হয়। কিন্তু ব্যক্তিসত্তাকে অনিবার্যভাবে হতে হয় মহাকালের নিষ্ঠুর করাল গ্রাসের শিকার।
বাংলা সাহিত্যের আরো একটি স্বতন্ত্র স্থান স্থান শূন্য করে চলে গেলেন নবনীতা দেবসেন। কিন্তু তাঁর সাহিত্য, তাঁর অসামান্য সৃষ্টি যুগে যুগে প্রেরণা জোগাবে পাঠকমহলকে।
বৃহস্পতিবার, ৭.৩৫ মিনিটে পরলোক পাড়ি দিয়েছেন তিনি ৷ একটা দীর্ঘশ্বাস, বহু ধুলো পড়ে যাওয়া স্মৃতি এক ঝলকে ভেসে এল চোখের সামনে ৷
বয়স হয়েছিল ৮১ বছর ৷ ক্যানসার রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন তিনি ৷
শোকাহত, স্তব্ধ সারা সাহিত্য জগত।
শুক্রবার হিন্দুস্তান পার্কে নিজের বাড়ি ‘ভালোবাসা’-র সামনে অগুণতি অনুরাগীর ভিড়। শেষবারটি দেখতে চাইছেন, শ্রদ্ধা জানাতে চাইছেন প্রিয় লেখককে, মনের মানুষটিকে।
খানিকক্ষণ পর, বেলা ১১টা নাগাদ হিন্দুস্তান পার্কের ‘ভাল বাসা’ থেকে বের করা হবে নবনীতা দেবসেনের মরদেহ।
তার আগেই ভালোবাসায় উপস্থিত হচ্ছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় যাচ্ছেন নবনীতা দেবসেনকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে।
সাহিত্য জগতকে সমৃদ্ধ করা নবনীতা ১৯৭৫- ২০০২ তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্যের অধ্যাপিকা ও বেশ কিছুকাল বিভাগীয় প্রধান ছিলেন।
এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপেরও কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন। তাকে তুলনামূলক সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট অথরিটি মানা হয়।
যাদবপুরে তিনি কবি বুদ্ধদেব বসু ও সুধীন্দ্রনাথ দত্তের স্নেহধন্য ছাত্রী ছিলেন।
১৯৯৯ সালে আত্মজীবনীমূলক রম্যরচনা ‘নটী নবনীতা’ বইটির জন্য তিনি সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার লাভ করেন। ২০০০ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন।