পশ্চিমবঙ্গ সরকার শীঘ্রই বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বিদেশি নাগরিকদের জন্য দুটো আটক কেন্দ্র (ডিটেনশন সেন্টার) স্থাপন করবে। তবে এও জানানো হয়েছে যে, এই শিবিরের সঙ্গে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) র সাথে “একেবারেই কোনও যোগসূত্র নেই।” শনিবার এ কথা স্পষ্ট জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে নিউ টাউন এলাকায় এক টুকরো জমি চূড়ান্ত করেছে আটক কেন্দ্র তৈরির জন্যে। পশ্চিমবঙ্গ সংস্কারমূলক সেবা মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস পিটিআইকে এ কথা জানিয়েছেন।
বিশ্বাস আরো জানান, দ্বিতীয় ডিটেনশন সেন্টারটির জন্যে উত্তর চব্বিশ পঙ্গণা জেলার বনগাঁয় জমি সন্ধানের প্রক্রিয়া জারি রয়েছে।
তিনি বলেন, জমিটির অংশ চিহ্নিত না হওয়া পর্যন্ত বনগাঁয়ের একটি বিদ্যমান সরকারি ভবনকে অস্থায়ীভাবে বিদেশি নাগরিকদের থাকার জন্য দ্বিতীয় শিবির হিসাবে রূপান্তর করা যেতে পারে।
উজ্জ্বল বিশ্বাস জানাচ্ছেন, “এই ডিটেনশন সেন্টারগুলো সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা মেনে নির্মাণ করা হচ্ছে।”
“এনআরসি এর সাথে ডিটেনশন সেন্টারের কোন যোগাযোগ নেই।”
মন্ত্রী যোগ করেছেন, দয়া করে এটি এনআরসির সাথে লিঙ্ক করবেন না।
এই বিদেশি নাগরিকদের অধিকাংশ আফ্রিকান দেশভুক্ত। সংশোধন বিভাগের সূত্র জানিয়েছে।
ভিন্ন ডিটেনশন সেন্টার তৈরির কারণ হিসেবে বিশ্বাসবাবু বলেন,“এখন অবধি, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য গ্রেপ্তার করা বিদেশি নাগরিকদের সাথে স্থানীয় কয়েদিদের রাখা হয়। তবে, আমরা লক্ষ্য করেছি যে এটি বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং ভাষায় সমস্যার সৃষ্টি করে এবং পরিস্থিতি সামাল দেওয়া আমাদের পক্ষে বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।”
সূত্র জানায়, বর্তমানে প্রায় ১১০ বিদেশি নাগরিককে বিচারের অধীনে রাখা হয়েছে এবং তাদের রাজ্যের বিভিন্ন সংশোধনাগারে স্থানীয় কয়েদিদের সাথে রাখা হয়েছে।
নতুন তৈরি দুটি আটক কেন্দ্রে প্রায় ২০০ বন্দি থাকতে পারবে।
প্রসঙ্গত, অসমের চূড়ান্ত এনআরসি তালিকা থেকে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। ফলে এনআরশি আতংক ছড়িয়েছে সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে।
বিদেশি ট্রাইব্যুনাল বিদেশি ঘোষিত ব্যক্তিদের জন্য অসমের গোয়ালপাড়া, কোকরাঝার, তেজপুর, ডিব্রুগড়, যোরহাট এবং শিলচরে জেলা কারাগারে ছয়টি আটক কেন্দ্র রয়েছে।
এদিকে মমতা কেন্দ্রের সমস্ত কথা উড়িয়ে রাজ্যবাসীকে আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন, “বাংলায় অসমের মতো কোনও আটক শিবির থাকবে না, কারণ এই রাজ্যে কোনও এনআরসি থাকবে না।”