কেন্দ্রীয় পরিবেশ ও বন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল হয়ে উঠেছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন বাবুল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা ৪ ঘন্টার বেশি সময় বাবুল সুপ্রিয়কে ঘিরে থাকেন! শুধু তাই নয় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় চলে এলে তাঁকেও একইভাবে আটকে দেওয়া হয়।
বিজেপির ছাত্রসংগঠন ‘অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ’ আয়োজিত নবীনবরণ উৎসবে যোগ দিতে গিয়ে তাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন সুপ্রিয়। তাঁর সঙ্গে বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পালও ছিলেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিতে থাকে ‘গো ব্যাক বাবুল সুপ্রিয়’।
বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের মধ্যে নকশালপন্থী এবং এসএফআই সমর্থিতরাও ছিলেন।
কেন্দ্রিয় মন্ত্রীকে পড়ুয়াদের একাংশ আটকে ফেলেন। সংবাদ পাবার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় রাজভবন থেকে নিজেই বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসেন। পুলিশি নিরাপত্তার মাঝে তিনি আটক বাবুল সুপ্রিয়র কাছে পৌঁছান। তাঁকে গাড়িতে বসানো হয়।
কিন্তু উন্মত্ত ছাত্ররা অন্য একটি গেট দিয়ে এভিবিপির সমর্থকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকে এসএফআইয়ের ইউনিয়নরুম ভেঙে চুরমার করে ফেলেন। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বাবুল সুপ্রিয় গো ব্যাক স্লোগান তুলতে থাকে।
বাবুল সুপ্রিয়র চুল টেনে, জামা ছিঁড়ে ফেলে বিক্ষোভকারীরা। কিল, ঘুষা কিছুই বাদ যায় না। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে বার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ জানাতে শুরু করে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ছাত্রছাত্রীদের মারতে মারতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকেছেন। তাঁকে ক্ষমা চাইতেই হবে, নইলে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে বের হতে দেয়া হবে না।
এরপর রাত ৮টা ১০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩নম্বর গেট রাজ্যপালের কনভয়কে পুলিস বের করে দেয়।
বাবুল সুপ্রিয় বিক্ষোভের মাঝে দাঁড়িয়েই বলেন, ‘‘সকলেই দেখেছেন, আমাকে কী ভাবে মারধর করা হয়েছে। কিল, চড়, ঘুসি মারা হয়েছে, চুল ধরে টানা হয়েছে, লাথি মারা হয়েছে।’’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনা ঘটানো হচ্ছে, তা কোন ধরনের গণতন্ত্রের পরিচয়— সে প্রশ্নও তুলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা তাপস রায় বলেন, ‘‘এই ভাবে কাউকে হেনস্থা করা যায় না। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটেছে তাকে সমর্থন করতে পারছি না।’’
রাজ্যপাল এই ঘটনার জন্যে সম্পূর্ণভাবে দায়ী করেছেন উপাচার্যকে। কারণ এত সাংঘাতিক কাণ্ড ঘটে যাবার পরও উপাচার্যের পক্ষ থেকে কোনরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি!
এসএফআই রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, আমাদের ঘোষিত অবস্থানই ছিল, নীতিগতভাবে বিজেপি বা এবিভিপি–র বিরোধিতা করবই। তবে একজন মন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও অনুষ্ঠানে আসতেই পারেন। মন্ত্রীকে হেনস্থার যে ঘটনা ঘটেছে তাতে এসএফআই–এর কেউ ছিল না। তবে একজন বিশ্ববিদ্যালয়ে বসে উস্কানি, শাসানি দিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে গেলেন। এরপর যা হল তা নিন্দার ভাষা নেই।