রবিবার ভোরে কলকাতার গলফ গ্রিনে উদ্ধার হয় মৃত যুবক অসমের বাসিন্দা। নানা তথ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখে তাঁর পরিচয় জানতে পেরেছে পশ্চিমবঙ্গের যাদবপুর থানার পুলিশ।
সূত্রের খবর, মৃত যুবকের নাম সন্তোষ সিং অধিকারী। বয়স ২৭ বছর। তিনি অসমের যোরহাটের নেফাবাড়ির বাসিন্দা মোহন সিং অধিকারীর ছেলে। সন্তোষ পেশায় একজন আর্কিটেক্ট। গোয়ার এক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশোনা করেন। তবে উচ্চ মাদকাসক্তি ছিল তার।
তবে কী কারণে এবং কীভাবে খুন হয়ে গেলেন তিনি, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
রবিবার সাতসকালে গলফ গ্রিনের সেন্ট্রাল পার্ক এলাকা থেকে উদ্ধার হয় অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ। তাঁর শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। হাত, পা ভাঙা ছিল, কানের পাশেও আঘাত ছিল।
প্রাথমিক অনুমান, খুব করা হয়েছে যুবককে। মৃত যুবকের পরিচয় জানার চেষ্টা করতে থাকে পুলিশ। ঘটনার গুরুত্ব অনুযায়ী তদন্তে নামে লালবাজারের হোমিসাইড শাখাও।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে প্রথমে পুলিশ জানতে পারে, ওই যুবক এলাকায় একেবারেই বহিরাগত। কেউ তাকে কখনও দেখেনি।
পরে অবশ্য বিভিন্ন সূত্র মারফত যাদবপুর থানার পুলিশ বেশ কিছু তথ্য হাতে পান।
অসমের যোরহাটের বাসিন্দা ২৭ বছরের সন্তোষ সিং অধিকারী গোয়ায় ইঞ্জিনিয়ারিং পাশের পর সেখানেই একটি সংস্থায় চাকরি করতে শুরু করেন। কিন্তু অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়ার ফলে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত হতে হয়। ততদিনে সন্তোষ মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। দিল্লিতে কয়েকদিনের জন্য পুনর্বাসন কেন্দ্রেও ছিলেন তিনি। তারপর চলে আসেন কলকাতায়, নতুন চাকরির সন্ধানে।
দেড় মাস আগে কলকাতায় এসে যাদবপুরের নিউ বিক্রমগড়ের কাছে একটি মেসে থাকতে শুরু করেন সন্তোষ। তবে গোয়ার চাকরিটি হারানোয় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলেন তিনি। রুমমেটরা তাঁকে উৎসাহিত করতেন। কিন্তু সকলের সব প্রচেষ্টাই জলে গেল।
পুলিশ তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে, গত রবিবার প্রচুর পরিমাণে মদ্যপান করেছিলেন সন্তোষ। এরপর ভোর চারটে নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তারপর সকালে গলফ গ্রিনের সেন্ট্রাল পার্কে মেলে তাঁর দেহ। পরে সন্তোষের মৃত্যুর খবর পাঠানো হয় তাঁর অসমের বাড়িতে।
তাহলে কি মদ্যপান করে কারও সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েছিলেন সন্তোষ? সে কারণেই কি খুন? এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার পাশাপাশি পুলিশের সন্দেহের তালিকায় রয়েছে সন্তোষের বিক্রমগড়ের রুমমেটরাও।