একবিংশ শতাব্দীতে এসেও অমিত শুক্লার মতো কিছু মানুষ সংখ্যালঘুর হাত থেকে খাবার নিতে অস্বীকার করতে পারেন ঠিকই, তবে স্তনের ক্ষেত্রে কোন আপত্তি নেই। তা সে মুসলমানের স্তন হোক কিংবা হিন্দুর। শুনতে অশ্লীল মনে হলেও, যে স্তন পান করে বিশ্বের সন্তান বেঁচে আছে, সে স্তন স্পর্শের জন্যে কারো কারো মন অস্থির হয়ে থাকে। এ থেকে বুঝতে বাকি থাকে না নারী জাতিকে কিছুসংখ্যক পুরুষ ‘মায়ের জাত’ভাবতেই পারেন না। নারীর মাংসপিণ্ড হলেই হলো। সোশ্যাল মিডিয়া, রাস্তা-ঘাটে কমেন্টের বাহার বয়ে যায়।
স্তনের এই প্রসঙ্গটি এসেছে, সম্প্রতি জব্বলপুরের বাসিন্দা অমিত শুক্লার অজ্ঞতা দেখে। গত বুধবার অমিত শুক্লা জোম্যাটোর মাধ্যমে নিরামিষ খাবার অর্ডার দেন৷ তাঁর কাছে মেসেজ আসে ফৈয়াজ নামক এক যুবক খাবার পৌঁছে দেবে৷ এরই মধ্যে ফৈয়াজ অমিত বাবুকে ফোন করে ঠিকানা জানতে চাইলেন। কিন্তু অমিত শুক্লা ডেলিভারি বয় মুসলিম, এই অজুহাতে খাবারের অর্ডার বাতিল করে দেন।
সারা বিশ্ব আজ দেখছে অমিত শুক্লার কাণ্ড!
কিন্তু যতই ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে চলার ভাব দেখান না কেন অমিত বাবু। তিনি যে চরিত্রহীন, তা প্রমাণ হয়ে গেল। অন্তর তাঁর কলুষিত। নারীর স্তনের প্রতি তিনি মোহগ্রস্ত। এমনকি এই কথা তিনি প্রকাশ করেছিলেন স্বয়ং লেখিকা তসলিমা নাসরিনের এক টুইটার পোস্টে!
তসলিমা নাসরিনও তো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। যে মানুষ মুসলমান ডেলিভারি বয়ের হাত থেকে খাবার সংগ্রহ করতে অস্বীকার করেন, তিনি কি করে একজন মুসলিম নারীর স্তনের দিকে চোখ দিলেন? প্রশ্ন সেখানেই।
২ আগস্ট তসলিমা ফের সেই পোস্টটি শেয়ার করেছেন। পাশাপাশি বাঙালি অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় অমিতবাবুকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি।
কয়েক বছর আগে তসলিমা নাসরিন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে তোলা টুইটারে একটি ছবি শেয়ার করেছিলেন। সেই ছবির নীচে অমিত কমেন্ট করেছিলেন, “তোমার স্তন দু’টি অসাধারণ। আশা করি আমার বক্তব্য তোমার ভাল লাগবে।”
এই ছবি এবং কমেন্টের স্ক্রিনশট টুইটারে পোস্ট করেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা। তিনি লেখেন, “অমিত শুক্লা স্তনের প্রতি মোহগ্রস্ত। সেটা হিন্দু নারীর স্তন কি মুসলিম মহিলার স্তন, তা নিয়ে তাঁর কিছু এসে যায় না। কিন্তু যখন খাবারের প্রসঙ্গ আসে, তাঁর হিন্দু ডেলিভারি বয় চাই। এই ধরনের মানুষকে কি সব জায়গা থেকে বয়কট করা উচিত নয়?”
নীচে দেয়া হল স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের ট্যুইট, সঙ্গে অমিত শুক্লার অশ্লীল কমেন্টঃ
So this creep Amit Shukla Namo Sarkar is obsessed with boobs. Doesn’t mind Hindu boobs or Muslim boobs. But when it comes to #food he needs a Hindu delivery boy. Shudnt we ban such creeps from all places of service ?! #JustAsking pic.twitter.com/DEtYnlI4Z9
— Swastika Mukherjee (@swastika24) July 31, 2019
Is it the man who cancelled Zomato order for being assigned a non-Hindu delivery boy? He has no respect for women? Or he showed his disrespect to me because i am a non-Hindu? pic.twitter.com/PS8tBICGU4
— taslima nasreen (@taslimanasreen) August 2, 2019