যতদূর-যেদিকে তাকানো যায়, প্রকৃতির রুদ্ররূপ গোটা সুন্দরবন জুড়ে। নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে একে একে গ্রামগুলো। নুন আনতে পান্তা ফুরনো মানুষগুলোর বাসস্থানটুকুও নিশ্চিহ্ণ হয়ে গেছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কোন ক্ষতিপূরণ এসে পৌঁছয়নি, পৌঁছয়না!
আয়লা, বুলবুলের সেই ক্ষত তো এখনো দ্গদগে। এবার মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এলো আমফান! কেমন আছেন সুন্দরবনের মৎস্যজীবীরা?
সুপার সাইক্লোন আমফানের পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্যে দক্ষিণ ২৪ পরগণা, কাকদ্বীপ গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেবল তাই নয়, কাকদ্বীপে প্রশাসনিক বৈঠকও করেছেন। বিপর্যয়ের সম্মুখীন হওয়া মানুষগুলোর জন্যে ক্ষতিপূরণের ঘোষণাও করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও কী স্বস্তিতে ঘুমোতে পারছেন সুন্দরবনের মৎস্যজীবীরা?
তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জির সবরকম আশ্বাস মানতে নারাজ দক্ষিণ সুন্দরবনের বেশিরভাগ মৎস্যজীবী পরিবার। সরাসরি তাঁরা জানিয়েছেন, স্বজন-পোষণ, দল নির্বিশেষে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়। সাহায্যের কোন কিছুই তাঁরা পাননা।
স্থানীয় বহু লোক অভিযোগ জানাচ্ছেন, সাহায্য চাইতে গেলে তাঁদের বলা হচ্ছে, “তোমরা বিজেপির, সাহায্য পাবে না। অথচ আমরা তৃণমূল করি, তাও বলে আমরা বিজেপি দলের মানুষ!”
আসলে মুখ্যমন্ত্রীর প্রচুর প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেলেও দুঃস্থ মানুষগুলোর মনে জন্ম নিচ্ছে দিনের পর দিন অভিযোগ, হাহাকার! সরকারের প্রতিশ্রুতি শোনা এখন তাঁদের কাছে রূপকথার সমান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যে মানুষগুলোকে প্রতিবছর বন্যা, দুর্যোগ ভাসিয়ে নেয়। মাথা তুলে দাঁড়াতে চায় গলা সমান জল থেকে, আঘাতটা তখনই ফের আসে। তাই এখন আর কোন প্রতিশ্রুতি তাঁদের আশ্বস্ত করতে পারে না।