সীমান্ত হাট। এ যেন আরেকভাবে ভারত-বাংলাদেশের মিলন। দু-দেশের সম্পর্কের উন্নতি এবং সীমান্ত এলাকায় বৈধ বাণিজ্য নিশ্চিতির জন্যে শুরু করা হয়েছিল সীমান্ত হাট।
এবার ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে খুব শীঘ্রই চালু হতে চলেছে ৩টি বর্ডার হাট। দুই দেশের সীমান্তবর্তী মেঘালয় অঞ্চলে এই হাটগুলো চালু করা হবে।
এই ৩ টি ছাড়াও আরো ৯টি বর্ডার হাট চালুর জন্য অবকাঠামো নির্মাণের কাজ চলছে।
ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসের বাণিজ্যিক প্রতিনিধি প্রময়েশ বাসাল গণমাধ্যমে বলেছেন, “দু-দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠকে আরও দিনটি হাট চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।”
প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য যে, ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তে মোট ২২টি হাট বসানোর কথা ছিল। কিন্তু দুঃখজনক বিষয়টি হলো, ২০১১ সাল থেকে ১৮ দীর্ঘ ৮ বছরে মাত্র ৪টি বর্ডার হাট চালু হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৩ জুলাই কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার বালিয়ামারি সীমান্ত এলাকায় কার্যক্রম শুরু করে প্রথম সীমান্ত হাট।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা যাচ্ছে, আগামি মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের পরিকল্পনা রয়েছে। মোদির ঢাকা সফরের সময় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনটি বর্ডার হাটের উদ্বোধন হতে পারে।
বর্ডার বা সীমান্ত হাট কী?
চারদিকে ধানক্ষেত, তার মাঝে কয়েকটি আধাপাকা ঘর। একপাশে বাংলাদেশী বিক্রেতারা বসেন, অন্যপাশে ভারতীয় বিক্রেতারা। বিজিবি বা বিএসএফকে পাস বা পরিচয়পত্র দেখিয়ে বাজারে প্রবেশ করেন ক্রেতারা।
হাটের পাঁচ কিলোমিটার এলাকার মানুষের ওই হাটে নিয়মিত কেনাকাটা করার অনুমতি রয়েছে।
সে হাটে শুধু কেনাকাটা নয়, দুই দেশের মানুষের যোগাযোগের জন্যও, শুরু থেকেই হাটগুলো মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
মাটি ভাগ হয়েছে, মা ভাগ হয়নি। যাদের আত্মীয় স্বজন দুই দেশে রয়েছে, তাদের অনেকেই দুর দুর থেকে আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করার জন্যে এখানে আসেন।
দুই দেশের বোঝাপড়া অনুযায়ী, উভয় দেশ থেকে ২৫জন বিক্রেতা হাটে অংশ নেন। তবে ক্রেতাদের সংখ্যা নিয়ে নির্দিষ্ট কোন সীমা নেই।
হাটের আশেপাশে পাঁচ কিলোমিটার এলাকার বাসিন্দাদের স্থায়ী পরিচয়পত্র দেয়া হয়েছে, যেটি দেখিয়ে তারা সহজেই হাটে যেতে পারেন। তবে অন্যদেরও সাময়িক পাস নিয়ে হাটে প্রবেশের সুযোগ রয়েছে।
বিজিবি এবং বিএসএফের সদস্যরা জানালেন, সাধারণত প্রতিটি হাটে প্রত্যেক দেশ থেকে দুহাজার মানুষ এখানে কেনাকাটা করতে আসেন। এই হাটে টাকা ও রূপি, দুই মুদ্রাতেই লেনদেন হয়।
বাংলাদেশের এক বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশী একশ টাকা সমান ভারতীয় আশি টাকা ধরে তারা পণ্যের বিনিময় করে থাকেন।
যেমন, বাংলাদেশী যে পণ্যটির গায়ে ১০০ টাকা লেখা থাকে, সেটা তারা ৮০ ভারতীয় মুদ্রায় বিক্রি করেন।