মধুসূদন দত্তের নামে প্রথমেই যে কথাটি মনে ভেসে আসে তা হচ্ছে, মাতৃদুগ্ধসম বাংলা ভাষাকে যারা হেলায় দূরে ঠেলে রাখেন তাঁদের কঠিন এবং বাস্তব শিক্ষাটি গ্রহণ করা উচিৎ মহাকবির কাছ থেকে।
“হে বঙ্গ, ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন;-
তা সবে, (অবোধ আমি!) অবহেলা করি,
পর-ধন-লোভে মত্ত, করিনু ভ্রমণ
পরদেশে, ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি।”
আজ ২৫শে জানুয়ারি। মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৬তম জন্মদিন।
কবির জন্মস্থান বাংলাদেশের যশোরের সাগরদাঁড়িতে চলছে সপ্তাহব্যাপী মধু মেলা। ২২ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া মেলার সমাপ্তি হবে ২৮ জানুয়ারি।
১৮২৪ সালের এই দিনে যশোরের সাগরদাঁড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন মধুসূদন দত্ত।
এ উপলক্ষে কবির স্মৃতিধন্য কপোতাক্ষ নদের তীরের সাগরদাঁড়িতে বসেছে সপ্তাহব্যাপী মধু মেলা। মেলা মঞ্চে চলছে নাচ-গান, যাত্রাসহ নানা আয়োজন। চলছে কবির সৃষ্টিকর্ম নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা। অশ্রুসিক্ত হয় মধুসূদন দত্তের সেই সমাধি লিপি পাঠ করলেঃ
“দাঁড়াও, পথিক-বর, জন্ম যদি তব
বঙ্গে! তিষ্ঠ ক্ষণকাল! এ সমাধিস্থলে
(জননীর কোলে শিশু লভয়ে যেমতি
বিরাম) মহীর পদে মহানিদ্রাবৃত
দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন!
যশোরে সাগরদাঁড়ী কবতক্ষ-তীরে
জন্মভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি
রাজনারায়ণ নামে, জননী জাহ্নবী!”
[স্ত্রী হেনরিয়েটার মৃত্যুর তিন দিন পরেই কলকাতা জেনারেল হাসপাতালে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত পরলোক গমন করেন। তাঁকে কলকাতার লোয়ার সার্কুলার রোড ক্রিশ্চিয়ান সেমেটারিতে সমাহিত করা হয়।তাঁর বিখ্যাত সমাধি-লিপি তিনি নিজেই লিখে গিয়েছিলেন।]
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় মেলার আয়োজন করেছে জেলা প্রশাসন। কবির সহস্র ভক্ত-অনুরাগীদের ভিড় জমেছে মধুমেলায়।
এবার মধুমেলা থেকে জোরদার দাবি উত্থাপন হয়েছে কবির বাস্তুভিটায় তাঁর স্মৃতি স্মরণে সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার।