সমাজে পুরুষতান্ত্রিকতার শিকার শুধু পুরুষরাই নয়, নারীরাও আছে।
ত্রিপুরার সিপাহি জেলায় এক মহিলাকে ধর্ষণের ফলে গর্ভবতী হওয়ার পর সেই মহিলার শিশুসন্তানকে ধর্ষকের স্ত্রী নদীতে ফেলে হত্যা করেছেন।
জেলার শ্রীমন্তপুর গ্রামের এই ঘটনায় ধর্ষিতা মহিলাকে ১ নভেম্বর তারিখে গ্রামবাসীরা মিলে খুঁটায় বেঁধে নৃশংসভাবে পেটানো অবস্থায় পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে। এবং সঙ্গে সঙ্গে ওই মহিলাকে সংকটজনক অবস্থায় চিকিৎসালয়ে ভর্তি করানো হয়।
নির্যাতিতা মহিলা সিপাহিজেলার মুখ্য আইনজীবীর কাছে নিজের সমস্ত ভাষ্য লিপিবদ্ধ করেছেন। তিনি বলেন যে, তাঁর নবজাতক সন্তানটিকে ধর্ষণকারী আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী এবং তাঁর পরিবারের লোকজনেরা মিলে নদীতে ফেলে দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আনোয়ার হোসেন (৩৮) তাঁকে বহুবার ধর্ষণ করেছিলেন তাঁর একাকিত্বের সুযোগ নিয়ে। মহিলার স্বামী বিদেশে কাজ করেন। ফলে গত প্রায় সাড়ে তিন-চার বছর ধরে তিনি একা বাস করছিলেন বাড়িতে। একা বাস যে কেউ করতে পারেন, যে কোন কারণে! কিন্তু এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে আনোয়ার রীতিমতো হত্যার হুমকি দিয়ে মহিলাকে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করেছেন।
নৃশংস ঘটনা সংঘটিত করা আনোয়ারের বিরুদ্ধে যখন উক্ত মহিলা গ্রাম পঞ্চায়েতকে জানিয়েছেন, আশ্চর্যজনকভাবে পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের পরিচয় দিয়ে পঞ্চায়েতও আনোয়ারের পক্ষ নিয়ে মহিলাকে দোষী সাব্যস্ত করে!
এমনকি নির্যাতিতা মহিলাকে ত্যাগ করার জন্যে তাঁর বিদেশে থাকা স্বামীকেও খোঁচা দেওয়ারও অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে।
গ্রামবাসী ধর্ষককে শাস্তি না দিয়ে নির্মমভাবে ধর্ষিতাকে ১ নভেম্বর ঘর থেকে বের করে এনে প্রহার আরম্ভ করে।
মারপিটে গ্রামের অন্যান্য বাসিন্দার সঙ্গে জড়িত ছিল ধর্ষক, অত্যাচারী আনোয়ার, স্ত্রী সাহেলা খাতুন এবং পরিবারের অন্য দু-জন সদস্য আখতার হোসেন ও রৌশানা বেগম।
আনোয়ারের স্ত্রী এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মায়ের কাছ থেকে জোর করে অবোধ শিশুটিকে নিয়ে গোমতীতে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। শিশু সন্তানটির জন্ম হয়েছিল ৮ অক্টোবর সোনামুরা হাসপাতালে।
পুলিশ ধর্ষক আনোয়ার হোসেন, সাহেলা খাতুন এবং আখতার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে।
এবার অপরাধী সঠিক শাস্তি কবে পান, সেটাই মূলত দেখার!