নয়াদিল্লিঃ বিশ্বের জনসংখ্যা (World Population) আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার ৮০০ কোটির (৮ বিলিয়ন) মাইলফলক স্পর্শ করল। আজ মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) মানব উন্নয়নের এই মাইলফলক স্পর্শ করবে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে জাতিসংঘ (United Nations)।
জাতিসংঘের (UN) সাম্প্রতিক অনুমানগুলোতে বলেছে যে, বিশ্ব জনসংখ্যা ২০৩০ সালে প্রায় ৮.৫ বিলিয়ন (৮৫০ কোটি), ২০৫০ সালে ৯.৭ বিলিয়ন (৯৭০ কোটি) এবং ২১০০ সালে ১০.৪ বিলিয়ন (এক হাজার কোটি ৪০ লাখ) হতে পারে।
প্ৰতিবেদনে আরও বলা হয়েছে- ২০২৩ সাল নাগাদ ভারত জনসংখ্যার দিক থেকে চিনকেও (China) টপকে যাবে। বিশ্বের সর্বাধিক জনসংখ্যার দেশ হবে ভারত। জাতিসংঘ (UN) বলছে- ৭০০ কোটির মাইলফলক স্পর্শ করার মাত্ৰ ১১ বছর পর বিশ্বের জনসংখ্যা (Global Population) ৮০০ কোটিতে পৌঁছলো।
গোটা বিশ্বের মানুষের (World population) সংখ্যা নির্ভুলভাবে গণনা করা কঠিন কাজ। তবে জাতিসংঘ (United Nations) বলছে, ১৫ নভেম্বর জনসংখ্যা ৮০০ কোটিতে পৌঁছনোর তথ্যটি সেরা অনুমান। জনসংখ্যা (Population) বৃদ্ধি মূলত মৃত্যুহার হ্ৰাসের কারণে হয়। অন্যদিকে, জন্মের হার (Birth rate) বাড়ার ফলেও জনসংখ্যা বাড়ে। এছাড়া গড় আয়ু বৃদ্ধিও গুরুত্বপূর্ণ প্ৰভাব রাখে। বিশ্বব্যাপী ২০১৯ সালে মানুষের (human) গড় আয়ু ছিল ৭২.৮ শতাংশ। মৃত্যুর হার হ্ৰাসের ফলে বিশ্বব্যাপী (world wide) গড় আয়ু প্ৰায় ৭৭ দশমিক ২ শতাংশ হবে ২০৫০ সালে।
জনসংখ্যার (Population) পরিমাপক হিসেবে মানুষের গড় আয়ু , জন্মহার (Birth rate) ও মৃত্যুহার (death rate) নির্ণায়ক হিসেবে কাজ করলেও এবার অভিবাসনও জনসংখ্যা পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক হয়ে উঠেছে। ২০২২ সালের পরিসংখ্যানে সর্বাধিক জনবহুল দেশের ২টিই এশিয়ায়। দেশ দুটিতে বিশ্বের জনসংখ্যা ২৯ শতাংশ বসবাস করে। ভারত এবং চিনেই বাস করে ১০০ কোটি ৪০ লক্ষের বেশি মানুষ। তবে জনসংখ্যার (Population) দিক থেকে ২০২৩ সালে চিনকে টপকে যাবে ভারত। আগামী কয়েক দশকে চিনে জনসংখ্যা হ্ৰাস পাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। কারণ দেশটিতে দীর্ঘ দিন ধরে একটি করে শিশু নীতি চালু ছিল।
২০২০ সালে জাতিসংঘ (United Nations) জানায়, ২০৫০ সালের পর প্ৰথম বারের মতো বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ শতাংশের নীচে নেমে এসেছে। ১৯৫০ সালে যেখানে একজন নারীর সন্তান জন্মদানের হার ছিল গড়ে ৫ সেখানে বর্তমানে তা নেমে হয়েছে ২.৩ শতাংশ। ২০৫০ সালে সন্তান জন্মদানের হার নেমে আসবে ২.১ শতাংশে।
তবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই বলে উল্লেখ করেন জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের প্ৰধান নাটালিয়া কানেম। ৮০০ কোটি মানুষ মানব সভ্যতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইলফলক। প্ৰত্যাশিত গড় আয়ু বৃদ্ধি এবং মা ও শিশু মৃত্যু কমে আসার প্ৰশংসাও করেন তিনি।
জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস (Antonio Guterres, UN secretary General) এক বিবৃতিতে বলেন- ‘‘আমাদের বৈচিত্ৰ্যময়তাকে গুরুত্ব দিতে হবে। মানবীয় বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি আরও বলেন- স্বাস্থ্যখাতে অগ্ৰগতির কারণে বিস্মিত হওয়ার একটি উপলক্ষ তৈরি হয়েছে কারণ আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নাটকীয়ভাবে মা ও শিশুর মৃত্যুর হার (Maternal deaths) কমেছে। একইসঙ্গে পৃথিবীর সুরক্ষায় একে অপরের প্ৰতি দায়িত্ব পালনে প্ৰতিশ্ৰুতিবদ্ধ হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।