নয়াদিল্লিঃ এমন একটি প্ৰাণী যে মানুষের মগজ খেয়ে ফেলতে পারে। নাম ‘নিগ্লেরিয়া ফাউলেরি’। এটি একটি অ্যামিবা। চিকিৎসকরা এই প্ৰাণীটিকে ‘ঘিলুখেকো অ্যামিবা’(‘Brain-eating amoeba’) বলে। দক্ষিণ কোরিয়ার (South Korea) র সিওলে দিন কয়েক আগে একজন মধ্যবয়সীর মৃত্যু হয়েছে। থাইল্যান্ডে ঘুরতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর।
ছবি, সৌঃ আন্তর্জাল
মৃত ওই ব্যক্তির ময়নাতদন্তের পর দেখা গেছে তিনি এই ‘ঘিলুখেকো অ্যামিবা’ “brain-eating amoeba” দ্বারা আক্ৰান্ত হয়েছিলেন। কোরিয়ার ‘ডিজিজ কন্ট্ৰোল অ্যান্ড প্ৰিভেনশন এজেন্সি’ (Korea Disease Control and Prevention Agency) জানিয়েছে, ওই মধ্যবয়সী ‘নিগ্লেরিয়া ফাউলেরি’র শিকার। এর আগে এই রোগের কথা জানা গেছে কিন্তু এর কারণে কারও মৃত্যু হয়নি। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, এ রোগ সংক্ৰমিত হতে পারে। মৃত্যুও হতে পারে।
যে এলাকায় এই রোগ সংক্ৰমণ ছড়িয়েছে সেখানকার জলে সাঁতার কাটতে বা জলে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। ঘিলুখেকো অ্যামিবা (“brain-eating amoeba”) সাধারণত ফ্ৰেশ জলের পুকুর, হ্ৰদ, নদী অথবা খাল-বিল থাকতে পারে। গোটা পৃথিবীতে যে কোনও দেশে, যে কোনও স্বচ্ছ জলাশয়ে এই অ্যামিবার দেখা মিলতে পারে।
সাঁতার কাটার সময় জলে নামলে জল নাকে-মুখে-কানে ঢোকেষ জলে এই প্ৰাণীটি থাকলে সেই সময়েই জলবাহিত হয়ে নাক দিয়ে মাথার ভেতরে প্ৰবেশ করার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত নদী, পুকুর বা হ্ৰদে ডুব সাঁতার দিলে এমন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। শুধু তাই নয়, অ্যামিবা রয়েছে (“brain-eating amoeba”) এমন কলের জলে নাক মুখ ধুলে কিংবা সেই জল নাক দিয়ে টানলে তা মাথায় প্ৰবেশ করার আশঙ্কা থাকে। মস্তিষ্কে প্ৰবেশ করে ধমনীগুলিকে খেয়ে নষ্ট করে। শুরু হয় মস্তিষ্কে মারাত্মক সংক্ৰমণ। যার প্ৰাইমারি নাম অ্যামেবিক মেনিঙ্গোএনসেফেলাইটিস(প্যাম)। মস্তিষ্কে একবার সংক্ৰমণ হলে তা থেকে মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী।
১৯৩৭ সালে আমেরিকায় প্ৰথম সন্ধান মেলে এই রোগের। আমেরিকার রোগ নিয়ন্ত্ৰণ এবং প্ৰতিরোধ কেন্দ্ৰের তথ্য অনুসারে, এই রোগে ১৯৬২ সাল থেকে ২০২১ পর্যন্ত ১৫৪ জনের মধ্যে শুধুমাত্ৰ ৪ জন বেঁচেছেন। এই রোগে মৃত্যুর হার ৯৭ শতাংশ। জানা গেছে, ২০১৮ সাল পর্যন্ত ‘নিগ্লোরিয়া ফাউলেরি’তে মৃত্য হয়েছে ৩৮১ জনের। সমস্ত মৃত্যু হয়েছে আমেরিকা(America), ভারত(India) এবং থাইল্যান্ডে(Thailand)।