গুয়াহাটিঃ মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা (National Aeronautics and Space Administration (NASA)) চাঁদে মানব জীবনের বসতি স্থাপন করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছে। আর্টেমিস প্ৰকল্পের বিভিন্ন অংশ ও যন্ত্ৰাংশের কার্যক্ষমতা ও নির্ভরযোগ্যতা প্ৰমাণিত হলে পুরোদমে তৈরি হবে মানব বসতি।
NASAর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে- ২০৩০ সালের মধ্যে পৃথিবীর প্ৰাকৃতিক উপগ্ৰহে উপনিবেশ বা বসতি স্থাপন করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত সপ্তাহে নাসা চাঁদে একটি মনুষ্যহীন মহাকাশযান পাঠানোর পর এই বিবৃতি এসেছে।
আর্টেমিস ওয়ান (Artemis rocket) মিশনের অংশ হিসেবে গত ১৬ নভেম্বর চাঁদের উদ্দেশ্যে যাত্ৰা শুরু করেছে ওরিয়ন (Orion Space craft) স্পেসক্যাফট। চাঁদের ভবিষ্যতের বৈজ্ঞানিক মিশনগুলো পরিচালনার জন্য দীর্ঘ সময় মানব জীবনধারণের উপযোগী বাসস্থান প্ৰয়োজন হবে বলে মন্তব্য করেছেন ওরিয়ন নির্মাণ প্ৰকল্পের প্ৰধান হাওয়ার্ড হু। সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসএলএস রকেটে চড়ে ওরিয়নের চন্দ্ৰযাত্ৰাকে মানব সভ্যতার মহাকাশ যাত্ৰার ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক দিন হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি। বর্তমানে চাঁদ থেকে ৫৮হাজার ৮০০ মাইল দূরে আছে আর্টেমিস।
চাঁদে নভোচারীদের বয়ে নিওয়ার জন্যই ওরিয়নের নকশা করেছে NASA। তবে পরীক্ষামূলকভাবে প্ৰথণ মিশনে কোনও মানব যাত্ৰী নেই যানটিতে। তার পরিবর্তে ৩টি পুতুল ও ম্যানিকিন রয়েছে এতে।
Artemis ওয়ান সফল হলে দ্বিতীয় মিশনে মানব নভোচারীরা থাকবেন বলে জানিয়েছেন হু। তৃতীয় মিশনে নভোচারীদের নিয়ে চাঁদে অবতরণ করবে Orion। শেষবারে চাঁদে কোনো নভোচারীর পদচিহ্ন পড়েছিল ১৯৭২ সালের ডিসেম্বর মাসে। NASAর চাঁদে ফিরতে চাওয়ার একটি বড় কারণ হচ্ছে, উপগ্রহটির দক্ষিণ মেরুতে জলের খোঁজ করা। চাঁদে সত্যিই জল থাকলে তা মঙ্গলগামী মহাকাশযানের জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। NASA চাঁদে মানব পাঠানোর প্ৰায় ৫০ বছর পর নতুন করে মহাকাশ যান পাঠিয়েছে এবং সেখানে নভোচারীদের পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে প্ৰযুক্তির বিলিয়নিয়ার এলন মাস্ক (Elon Musk) এবং অন্যান্য মহাকাশ উত্সাহীরা মঙ্গলকে পরবর্তী মানব সীমান্ত হিসাবে বিবেচনা করেছেন।
যাইহোক, ব্লু প্ল্যানেট এবং রেড প্ল্যানেটের মধ্যে দূরত্ব আনুমানিক ৮৪ মিলিয়ন কিলোমিটার। পথে একটি স্টপওভার তৈরি করা অপরিহার্য এবং একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ বলে মনে করছে নাসা।
এই কারণেই চাঁদে বসবাসকারী নভোচারীরা মঙ্গল গ্রহে ক্রু মিশনের সূচনা পয়েন্ট হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।
হাওয়ার্ড হু, যিনি NASA-এর জন্য ওরিয়ন চন্দ্র মহাকাশযান কর্মসূচির নেতৃত্ব দিয়েছেন, বলেছেন- ভবিষ্যতের বৈজ্ঞানিক মিশনগুলিকে সমর্থন করার জন্য মানুষের বাসস্থান প্রয়োজন হবে।