দেশ-বিশ্ব কাঁপানো নির্ভয়া ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডে টলিউডের স্পষ্টবাদী অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াতের মন্তব্য ঘিরে চারদিকে চলছে সমালোচনার ঝড়।
কঙ্গনা সেই মহিলা আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংকে ধারালো আক্রমণ করেছেন। কারণ ইন্দিরা জয়সিং মৃতা নির্ভয়ার মা আশাদেবীকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, তাঁর ধর্ষকদের ক্ষমা করে দেয়া উচিৎ। যেভাবে সোনিয়া গান্ধী রাজিব গান্ধীর হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছিলেন।
এই মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কঙ্গনা। তিনি বলেছেন, ইন্দিরা জয়সিংয়ের মতো মহিলার গর্ভ থেকেই জন্মায় এক-একজন ধর্ষক। এছাড়া কটু মন্তব্য করা ইন্দিরা জয়সিংকে ধর্ষকদের সঙ্গে রাখা উচিৎ। তাহলে তিনি বুঝবেন যাতনা কী!
অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াতের এমন মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন নাট্যাভিনেতা কৌশিক সেন। তিনি কঙ্গনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন বলে জানালেন। শুধু তাই নয়। তিনি কঙ্গনার মস্তিষ্কের সুস্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
অভিনেতা কৌশিক সেন জানালেন যে, তিনি নির্ভয়ার ধর্ষকদের ফাঁসি অবশ্যই চান। কিন্তু অভিনেত্রীর মতামতের সঙ্গে তিনি কিছুতেই একমত নন। কোন সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন মানুষ এমন কথা বলতে পারে না।
কিন্তু আমরা দেখেছি, নির্যাতিতা, মৃতা তরুণী নির্ভয়ার মা আশাদেবী কঙ্গনা রানাওয়াতের বক্তব্যে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, অভিনেত্রী মায়ের বুকের জ্বালা বুঝেছেন। এমন নিদারুণ পরিস্থিতিতে কোন মা চাইবে না নিশ্চয় দোষীর শাস্তি মকুব হোক, অথবা ফাঁসি না হোক।
অভিনেতা কৌশিক সেনের এই মন্তব্য ভালোভাবে নেননি নারীবাদী সমাজ। কারণ পুরুষতান্ত্রিকতাকে লালন করা একজন মায়ের সন্তান পুরুষতান্ত্রিকতাকেই লালন করবে এটাই স্বাভাবিক। জানাচ্ছেন নারীবাদী সমাজ।
উল্লেখযোগ্য যে, আগামি ১ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টায় ধর্ষকদের ফাঁসি দেয়া হবে। জানা যাচ্ছে, ফাঁসির দিন যতই কাছে আসছে, ততটাই নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছে নরপিশাচ ধর্ষকরা।
তিহাড় সংশোধনাগারের একটি সূত্রের দাবি, তারা খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। চোখে মুখে চিন্তার ছাপ।
তাঁদের ফাঁসির দড়ি তৈরি করা হয়েছে বাক্সার জেলে। ভারতের একমাত্র এই জেলেই ফাঁসির দড়ি তৈরি করা হয়।
৪ ধর্ষকের এর আগে ফাঁসির দিন ধার্য করা হয়েছিল ২২ জানুয়ারি।
এরপর কিউরিটিভ পিটিশন, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন প্রভৃতি নানা আইনী ঝামেলায় সে তারিখ পিছিয়ে গিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি হয়েছে।
চার অপরাধী পবন গুপ্ত, মুকেশ সিংহ, বিনয় শর্মা এবং অক্ষয় ঠাকুর সিংহের সেলের বাইরে অন্তত দু জন করে রক্ষী পাহারায় থাকছেন। এখনও পর্যন্ত নকল ফাঁসির তিনটি মহড়া চালিয়েছে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।