নয়াদিল্লিঃ কর্ণাটকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরা নিয়ে Supreme Court বৃহস্পতিবার একটি ‘খণ্ডিত রায়’ দিল। হিজাব মামলায় Karnataka High Courtএর রায় নিয়ে ঐকমত্যে আসতে পারল না Supreme Courtএর Division Bench। তবে শেষ পর্যন্ত বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চে ‘খণ্ডিত রায়’ দিয়েছে।
বৃহস্পতিবারের খণ্ডিত রায়ের ফলে এ বার উচ্চতর বেঞ্চে গেল হিজাব মামলা। গত ১৫ মার্চ কর্নাটক হাই কোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল, হিজাব পরাকে ধর্মাচরণের প্রয়োজনীয় অঙ্গ হিসেবে দেখা ঠিক নয়।
বিষয়টি এখন উচ্চতর বেঞ্চ গঠনের জন্য ভারতের প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের কাছে পাঠানো হয়েছে। আগে শুনানির সময় যে যুক্তিগুলি উত্থাপিত হয়েছিল তার মধ্যে ছিল- মুসলিম মেয়েরা মাথায় স্কার্ফ পরার নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ক্লাসে যাওয়া বন্ধ করতে পারে।
কর্ণাটকের বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার, যা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা করেছিল, জোর দিয়েছিল যে আদেশটি “ধর্ম নিরপেক্ষ”। সরকারি আদেশের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভের সাক্ষী হয়েছে দক্ষিণের রাজ্য কর্ণাটক।
সেই রায়ের বিরুদ্ধে মুসলিম ছাত্রীদের আবেদনের ধারাবাহিক শুনানির পর গত ২২ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে নিজেদের রায় সংরক্ষিত রেখেছিল বিচারপতি Hemant Gupta এবং বিচারপতি Sudhanshu Dhuliaর বেঞ্চ। বিচারপতি হেমন্ত কর্নাটক High Courtএর রায়ের পক্ষে মত জানিয়ে আবেদন খারিজ করে দিলেও সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারার উল্লেখ করে বিচারপতি ধুলিয়া মুসলিম ছাত্রীদের আবেদনের যৌক্তিকতা মেনে নিয়েছেন। হিজাব পরার ব্যক্তিগত অধিকারকেও স্বীকৃতি দিয়েছেন তিনি।
প্ৰসঙ্গত উল্লেখ্য যে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে কর্নাটকের উদুপির একটি প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজে কয়েক জন হিজাব পরিহিত পড়ুয়াকে ক্লাসে বসতে বাধা দেওয়া হয়। কলেজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি বিজেপি বিধায়ক রঘুপতি ভট্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হিজাব পরিহিতরা ক্লাসে ঢুকতে পারবেন না। সেই থেকে বিতর্কের সূত্ৰপাত। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে রাজ্য জুড়ে। হিজাবের পাল্টা হিসাবে গেরুয়া উত্তরীয় পরে আন্দোলন শুরু করে একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। কয়েকটি জায়গায় হিজাবের পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলনকারীরা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়ে। পুলিশের সঙ্গেও একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সেই বিতর্কের আবহে পোশাক নির্দেশিকাও জারি করেছিল কর্নাটকের বিজেপি সরকার। তাতে বলা হয়েছিল কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট করে দেওয়া পোশাক পরেই পড়ুয়াদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসতে হবে। তবে যে সব কলেজে কোনও পোশাকবিধি নেই, সেখানে এমন পোশাক পরা যাবে না, যাতে শিক্ষাপ্ৰতিষ্ঠানের ভারসাম্য, ঐক্য এবং শৃঙ্খলা নষ্ট হয়। আদালতে কর্নাটক সরকার জানিয়েছে, ওই নির্দেশিকার সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার কোনও সম্পর্ক নেই। হিজাবের পাশাপাশি নিষিদ্ধ করা হয়েছে গেরুয়া উত্তরীয়ও।