গুয়াহাটিঃ আজ মহাষষ্ঠী। দেশজুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে নবরাত্রি। পশ্চিমবঙ্গ, অসম সমেত গোটা দেশ Durga Puja উৎসবমুখর। উৎসবের মেজাজ শুরু হয়ে গিয়েছে সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই। এবার গজে আগমন দেবী Durgaর। বিদায় নিচ্ছেন নৌকায়। শাস্ত্র মতে, গজে আগমন,ফল– গজে চ জলদা দেবী শস্য পূর্ণা বসুন্ধরা। নৌকায় গমন,ফল নৌকায়াং শস্যবৃদ্ধি জলবৃদ্ধিশ্চ।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসার- ষষ্ঠী তিথি শুরু হয়েছে ১৩ আশ্বিন শুক্ৰবার। শনিবার সারাদিন থাকবে, রাত ৮ টা ৩৫ মিনিট ৫০ সেকেন্ডে শেষ হবে।
হিন্দু শাস্ত্র মতে দেবী Durgaর নয়টি রূপ, যাকে বলা হয় নবদুর্গা! ‘প্রতিপদাদিকল্প’-এর পুজোয় দেবী Durga Pujaর ৯ রাত্রি ৯টি ভিন্ন দেবী রূপে পুজো করা হয়। প্রতিপদ-এ তিনি গিরিরাজ হিমালয়-কন্যা দেবী শৈলপুত্রী হিসেবে পূজিতা হন, দ্বিতীয়া-য় তপশ্চারিনী দেবী ব্রহ্মচারিণী হিসেবে পূজিতা হন, তৃতীয়া-য় শান্তি ও কল্যাণের দেবী চন্দ্রঘন্টা হিসেবে পূজিতা হন, চতুর্থী-তে ব্রহ্মাণ্ডউৎপন্নকারিনী দেবী কুষ্মাণ্ড হিসেবে পূজিতা হন, পঞ্চমীতে কুমার কার্তিকেয়র মাতা দেবী স্কন্দমাতা হিসেবে পূজিতা হন, ষষ্ঠীতে মহর্ষি কাত্যায়নের কন্যা দেবী কাত্যায়নী হিসেবে পূজিতা হন, সপ্তমীতে দুষ্টের দমনকারী দেবী কালরাত্রি হিসেবে পূজিতা হন, অষ্টমীতে মহাদেব-পত্নী দেবী গৌরী হিসেবে পূজিতা হন, আর নবমীতে সর্বসিদ্ধি প্রদায়িনী দেবী সিদ্ধিদাত্রী হিসেবে পূজিতা হন।
নবরাত্রি (Nabaratri) পুজোয় প্রতিপদ থেকে ষষ্ঠী পর্যন্ত নৈবেদ্য-সহ চণ্ডীপাঠ করা নিয়ম। বোধনের পুজোয় এ ছাড়াও শিব, দুর্গা, নারায়ণ, গৃহদেবতাদের আলাদা আলাদা নৈবেদ্য দিতে হয়। পিতলের থালায় (শিবের নৈবেদ্য শুধু পিতলের পরিবর্তে কাঁসা বা পাথরের থালায় সাজাতে হয়) চূড়া করে এক রেক মতো চাল, তার মাথায় মণ্ডা বা সন্দেশ, পাশে কলাপাতায় আলাদা আলাদা করে পাঁচকলাই ও ফল দিয়ে এক একটি নৈবেদ্য তৈরি হয়। সেই সঙ্গে আলাদা চিনির নৈবেদ্য ও দুধ-দই দিতে হয়। রাতে ফল, দুধ, ভেজানো মুগের ডাল ও মিষ্টি দেওয়া হয়।
মহাষষ্ঠীর সকালে পুজো হয় বোধন ঘরেই। বোধনের অন্য দিনের মতোই তার নিয়ম, কেবল ষষ্ঠী ও মার্কণ্ডের আলাদা দুটো নৈবেদ্য দেওয়া হয়। ষষ্ঠীর পুজোর জন্য আবাটা, তেল, হলুদ, ছাঁচিপান, শাড়ি, গামছা লাগে।
ষষ্ঠীর দিন পুজোর অতি প্রয়োজনীয় কয়েকটি জিনিস তৈরি করে রাখতে হয়। সেগুলি হল—শ্রী, বরণডালা, কুলো।
ষষ্ঠীর দিন সন্ধ্যাবেলা বোধনঘরে পুজোর পর প্রতিমার সামনে দেবীর অধিবাস, আরতি ও বরণ করা হয়। ৭ বা তার বেশি বিজোড় সংখ্যক এয়োস্ত্রী হাতে কুলো, বরণডালা, শ্রী নিয়ে সাত বার প্রতিমা প্রদক্ষিণ করবার পর প্রথমে বয়ঃজ্যেষ্ঠ মহিলা বরণ আরম্ভ করেন। সর্বাগ্রে গণেশ, তার পর একে একে দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, অসুর, সিংহ ও অন্যান্য বাহনকে বরণ করতে হয়।