নয়াদিল্লিঃ দেশে ধনী (Richest) এবং দরিদ্ৰের মধ্যে ব্যবধান ক্ৰমশ বাড়ছে। অক্সফামের (Oxfam) এক প্ৰতিবেদনে এ সম্পর্কে তুলে ধরা হয়েছে এক তথ্য। বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে ধনী ১ শতাংশের হাতে রয়েছে দেশের মোট সম্পদের ৪০ শতাংশেরও বেশি অংশ। অন্যদিকে দরিদ্ৰের জনসংখ্যার ৫০ শতাংশের হাতে রয়েছে মোট সম্পদের মাত্ৰ ৩ শতাংশ।
অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল সোমবার বিশ্ব অর্থনৈতিক মঞ্চের (WEF) বার্ষিক সভার প্ৰথম দিন এর বার্ষিক অসমতা প্ৰতিবেদনে প্ৰকাশ করেছে। রিপোর্ট অনুসারে ভারতের ১০ জন সবচেয়ে ধনী লোকের ওপর ৫ শতাংশ কর আরোপ কর বাধ্যতামূলক করলে শিশুদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার মতো প্ৰয়োজনীয় অর্থ পাওয়া যাবে।
প্ৰতিবেদনে বলা হয়েছে – মাত্ৰ একজন কোটিপতি গৌতম আদানি ২০১৭-২০২১ বর্ষে লাভের আয়ের ওপর এই সামান্য কর বাধ্যতামূলক করলে ১.৭৯ লক্ষ কোটি টাকা সংগ্ৰহ করা যাবে। যা এক বছরের জন্য ভারতে প্ৰাথমিক স্কুলগুলির ৫০ লক্ষেরও বেশি ভর্তি করার জন্য যথেষ্ট।
‘সার্ভাইভেল অফ দ্য রিচেস্ট’ (Survival of the Richest) অর্থাৎ সবচেয়ে ধনীর অস্তিত্ব রক্ষা শীর্ষক প্ৰতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যদি দেশের বিলিয়নেয়ারদের (India’s billionaires) সম্পদের (Wealth) ওপর ২ শতাংশ কর আরোপ করা হয় তা হলে অপুষ্টিতে আক্ৰান্তদের (Nutrition of malnourished) খাবার জোগার করা যাবে। আগামী ৩ বছরের মধ্যে দেশে ৪০ হাজার ৪২৩ কোটি টাকার প্ৰয়োজন পূরণ হবে।
রিপোর্ট অনুসারে দেশে ১০ জন ধনী বিলিয়নেয়ারের (India’s billionaires) ওপর ৫ শতাংশ প্ৰত্যক্ষ কর আরোপ করলে (১.৩৭ লক্ষ কোটি টাকা) পাওয়া যাবে, তা ২০২২-২৩ বর্ষের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্ৰক (Family Welfare Ministry) এবং আয়ুষ মন্ত্ৰালয়ের (Ministry of Ayush) বাজেটের চেয়ে (৮৬ হাজার ২০০ কোটি টাকা) ১.৫ গুণ বেশি। লিংগ বৈষম্য (Gender inequality) নিয়ে রিপোর্টে বলা হয়েছে- মহিলা কর্মীরা পুরুষ কর্মচারীদের থেকে উপার্জনের প্ৰতি টাকার বিপরীতে মাত্ৰ ৬৩ পয়সাই পেয়ে থাকেন।
একইভাবে তফশিল জাতি এবং গ্ৰাম্য শ্ৰমিকদের পারিশ্ৰমিকেও পার্থক্য রয়েছে। উচ্চ সামাজিক শ্ৰেণীর লোকেরা যা পারিশ্ৰমিক পেয়ে থাকে, তার তুলনায় তফশিলি জাতির লোকেরা ৫৫ শতাংশই পেয়ে থাকেন। গ্ৰামের শ্ৰমিকরা পান ৫০ শতাংশ পারিশ্ৰমিক।
অক্সফামের (Oxfam) রিপোর্ট বলা হয়েছে- বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে ধনী এক শতাংশ মানুষ গত দু বছরে বাকি জনসংখ্যার প্ৰায় দুই গুণ সম্পদ অর্জন করেছে। রিপোর্ট অনুসারে বিলিয়নেয়ারদের সম্পদ প্ৰতিদিন ২.৭ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে। অন্যদিকে, কমেও ১.৭ বিলিয়ন শ্ৰমিক বর্তমানে এমন দেশে বসবাস করে যেখানে মুদ্ৰাস্ফীতির হার মজুরি বৃদ্ধির চেয়েও বেশি। পৃথিবীর সবয়েচে ধনী এক শতাংশ ব্যক্তি গত ১ দশকে সব নতুন সম্পদের প্ৰায় অর্ধেকাংশই অধিগ্ৰহণ করেছে। গত ২৫ বছরে প্ৰথমবার একদিকে অত্যধিক সম্পদ অন্যদিকে চরম দারিদ্ৰতার হার বাড়ছে।