কলকাতাঃ কোনও লক্ষণ বোঝা যাচ্ছে না, এদিকে ভেতরে ভেতরে ছড়িয়ে পড়ছে মারণ রোগ। cancerএর ডায়গননসিস অনেক সময়ই এত দেরিতে হয় যে রোগীকে বাঁচানো প্ৰায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। কিন্তু অভিজ্ঞ অনকোলজিস্টরাই বলেন- বর্তমানে cancerএর চিকিৎসা এতটাই উন্নত হয়েছে যে গোড়ায় রোগ ধরা পড়লে, সময়মতো সঠিক চিকিসা হলে রোগীকে বাঁচানো গেলেও যেতে পারে।
প্ৰতীকী ছবি, সৌঃ আন্তর্জাল
তার জন্য দরকার সতর্কতা এবং সচেতনতা। মেয়েরা নিজেরাই পরীক্ষা করে বুঝতে পারবেন স্তনে কোনও (Breast Cancer) অস্বাভাবিকতা হচ্ছে কিনা, ভেতরে টিউমার হচ্ছে কিনা। এটা বোঝার জন্য যে কৌশল দরকার তা শেখাতে উদ্যোগী হয়েছে বিশ্বের অন্যতম ক্যানসার হাসপাতাল অ্যাপোলো ক্যানসার সেন্টার। ভারতে মেয়েদের মধ্যে স্তন ক্যানসার দিন দিন বাড়ছে। স্তন নিয়ে স্পর্শকাতর হওয়া, লজ্জা পাওয়া, ‘সেল্ফ এগজামিনেশন’ বা নিজেই নিজের স্তন কীভাবে পরীক্ষা করা যায়, সে সম্পর্কে ধারনা না থাকার জন্য এই রোগে আক্ৰান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এমনও দেখা গেছে, প্ৰাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পরলেও কয়েক মাসের মধ্যে সেটা বেড় গিয়ে স্টেজ ফোরে পৌঁছে যাচ্ছে। উন্নত মানের কেমোথেরাপিও রোগ নিয়ন্ত্ৰণ করতে পারছে না। একবার রোগ সেরে যাওয়ার কয়েক বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার cancerএর কবলে পড়েছেন এমন উদাহরণ অনেক রয়েছে।
কীভাবে সেল্ফ এগজামিনেশন করা যায় তা ছবির মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এর জন্য ‘আর্টক্যান’ (ArtCan) নামে একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কেরলের সুপ্ৰাচীন মিউরাল (Mural Art) চিত্ৰকলাকে ব্যবহার করে স্তন পরীক্ষার ৮ ধাপ শেখানো হয়েছে। এই ৮টি ধাপে ছবির মাধ্যমে দেখানো হয়েছে কীভাবে মেয়েরা নিজের স্তন পরীক্ষা করে তাতে অস্বাভাবিকতা ধরতে পারবেন। প্ৰতিটি ফ্ৰেমে সেল্ফ এগজামিনেশনের পদ্ধতি নিখুঁতভাবে দেখানো হয়েছে। এই ৮টি ধাপকে একসঙ্গে করে ‘চিত্ৰসূত্ৰ’ নামে একটি বইও বের করেছে অ্যাপোলো ক্যানসার সেন্টার(Apollo cancer center)। কলকাতার পার্ক হোটেলে এই নিয়ে অকটি অনুষ্ঠান হয়েছে। সেখানে বইটি উন্মোচন করা হয়েছে।
সাধারণত কম বেশি সব মেয়েদের স্তনেই লাম্প (পিণ্ড) থাকে। এর মধ্যে কয়েকটি ক্যানসারাস ও কয়েকটি নন-ক্যানসারাস। যে লাম্পগুলি টিপলে শক্ত লাগে এবং অবস্থান পরিবর্তন করে না, সেগুলি ক্যান্সার উপসর্গ হতে পারে।
এছাড়াও বগলে লাম্প বা পিণ্ড, স্তনে ব্যাথা অথচ তা মাসিক চক্ৰ সংক্ৰান্ত নয়, স্তনের আকার অস্বাভাবিক পরিবর্তন, স্তনের রং পরিবর্তন, স্তন হঠাৎ লাল কিংবা লালচে রঙের হয়ে যাওয়া, স্তনের ত্বক (Breast skin) অস্বাভাবিক কুঁচকে যাওয়া, স্তন বৃন্ত (Breast nipple) থেকে তরল পদার্থের নিৰ্গমন হওয়া, স্তনের আকারে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেওয়া। এই সমস্ত উপসর্গগুলি দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ছবি, সৌঃ আন্তর্জাল
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-এর একটি সমীক্ষায় জানা গেছে, প্রতি বছর প্রায় ১৩ লাখ ৮০ হাজার মানুষ নতুন করে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। আর ৪ লাখ ৫৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে এই রোগে।
তাই চিকিৎসকরা বারে বারে খাবার ও জীবনযাত্রার প্রতি নজর দিতে বলেন। চিনি ও লবণ খাওয়ার অভ্যাস কমালেই এই রোগ থেকে দূরে থাকা যায়। বেশ কিছু গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, ক্যান্সারের টিউমারের বৃদ্ধি (ম্যালিগন্যান্ট টিউমার) ঠেকাতে ব্রকোলি হয়ে উঠতে পারে অত্যন্ত উপকারী একটি খাবার। বিশেষ করে স্তন ক্যান্সার ঠেকাতে এই সবজি জাদুর মতো কাজ করে।