নয়াদিল্লিঃ গত ২৫ জানুয়ারি মার্কিন বিনিয়োগ সংস্থা হিনডেনবার্গের(Hindenburg)একটি প্ৰতিবেদন প্ৰকাশের পর আদানি গোষ্ঠীর (Adani Group) শেয়ার নিম্নমুখী। গোষ্ঠীর সম্পদমূল্য প্ৰায় অর্ধেক নেমে গেছে।
গত ৯ দিনে গোষ্ঠীর প্ৰধান গৌতম আদানি (Gautam Adani) বিরল এক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন। এই সময়ে আদানি গোষ্ঠীর (Adani Group) বিভিন্ন কোম্পানির বাজার মূলধন ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলারের বেশি কমেছে।
এর ফলে বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় বৃহস্পতিবার গৌতম আদানি(Gautam Adani) ১৬ তম স্থানে নেমে গেছেন। গত সপ্তাহেও ফোর্বসের (Forbes) সমীক্ষার তালিকায় তিনি তৃতীয় স্থানে ছিলেন। এমনকি এখন আর তিনি ভারত কিংবা এশিয়ার শীর্ষ ধনী নন। ভারতে এখন রিলায়েন্সের মুকেশ আম্বানিরও(Mukesh Ambani) নিচে নেমে গেছেন গৌতম আদানি(Gautam Adani)।
আদানি গোষ্ঠীর ৭টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির বাজার মূলধন এই জানুয়ারি মাসেই ছিল ২২০ বিলিয়ন বা ২২ হাজার কোটি ডলার। সমুদ্রবন্দর, কয়লাখনি, বিদ্যুৎ, খাদ্যপণ্যের ব্যবসা, বিমানবন্দর, আর সবশেষে গণমাধ্যম।
হিনডেনবার্গের প্ৰতিবেদন(Hindenburg report) প্ৰকাশ হওয়ার পর আদানির বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারদর হুর হুর করে নেমেছে। গত ৯ দিনে লাগাতার নিম্নমুখী ‘আদানি টোটাল গ্যাস’, ‘আদানি এন্টারপ্রাইজ’-এর মতো কোম্পানির শেয়ারদর। সেই সঙ্গে আদানির ব্যক্তিগত সম্পদমূল্য কমেছে প্রায় ৫৬ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ৬০০ কোটি ডলার।
শেষ ৯ দিনের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ‘আদানি টোটাল গ্যাসের’। তাদের শেয়ারদর কমেছে ৫১ শতাংশ। সবচেয়ে কম পড়েছে এনডিটিভির শেয়ারের দাম—১৭ শতাংশ।
প্ৰসঙ্গত উল্লেখ্য যে, হিনডেনবার্গের প্ৰতিবেদন অভিযোগ আনা হয়েছে আদানি গোষ্ঠী জালিয়াতি করে ধনী হয়েছেন। আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দর কৃত্ৰিমভাবে বাড়ানো হয়েছে। এভাবে এই গোষ্ঠীতে (Adani Group) বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্ৰতারণা করা হয়েছে। এই রিপোর্ট প্ৰকাশের পর তোলপার হয়েছে শেয়ার বাজার। বিশ্ব বাজারে গৌতম আদানির গ্ৰহণযোগ্যতা কমেছে।
২০২০ সালেও গৌতম আদানির (Gautam Adami) সম্পদমূল্য ছিল ৮.৯ বিলিয়ন বা ৮৯০ কোটি ডলার। এরপর উল্কার গতিতে বাড়তে থাকে সম্পদমূল্য। করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বের অন্য ধনকুবেরদের মতো গৌতম আদানির সম্পদও ফুলেফেঁপে ওঠে। ২০২১ সালে তাঁর সম্পদমূল্য দাঁড়ায় ৪০০০ কোটি মার্কিন ডলারে। আর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি যখন মুকেশ আম্বানিকে ছাড়িয়ে এশিয়ার তৃতীয় শীর্ষ ধনী হন, তখন তাঁর সম্পদমূল্য ছিল ৮ হাজার ৮৫০ কোটি ডলার।
আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভারতের শাসক দল BJPর ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণে আদানি গোষ্ঠীর অকল্পনীয় উন্নতি হয়েছে। গোটা ঘটনার উচিত তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছে দেশের সমস্ত বিরোধী দলগুলি(Opposition party)।