
অনেক ব্যক্তি একটি বিষয় ভেবেই পিছিয়ে আসেন যে, ব্যবসা করতে গেলে অনেক পুঁজির প্রয়োজন। এই ধারণা, মনে ভয় নিয়েই অনেকে ব্যবসায় নামবো নামবো করেও নামতে পারেন না। অনেকটা সময় পেরিয়ে যায় এদিক ওদিক করতে করতে। এদিক ওদিক ভাবতে ভাবতে। অথচ কিছু করা হয়ে ওঠে না।
ব্যবসায় বড় অংকের টাকার প্রয়োজন, এই ধারণা কোন কালেই সত্য নয়। ছোট্ট একটি মুদির ব্যবসাও অনেক বড় হয়ে যেতে পারে স্রেফ দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের জোরে। সঙ্গে লাগবে আত্মবিশ্বাস অবশ্যই। যা ছাড়া আপনি কোন কাজে এগোতে পারবেন না।
গ্রাহকের চাহিদা এবং জোগান বুঝে যে ব্যক্তি এগিয়ে যেতে পারেন, ব্যবসায়ী জীবনে তাঁরাই সফল হন।
ছোট পুঁজিতে গড়ে তোলা ব্যবসাই একদিন ইমারত গড়ে। এমন উদাহরণ প্রচুর আছে।
প্রথমেই ধরা যাক অ্যাপল ১৯৭০-এর দশকের কথা। ব্যক্তিগত কম্পিউটার তৈরি এবং বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন স্টিভ জবস এবং স্টিভ ওজনিয়াক।
তবে এই কাজের জন্যে যতটুকু টাকার প্রয়োজন, তার এক কানাকড়িও ছিল না তাঁদের কাছে।
সম্পদ বলতে ছিল শুধু ওজনিয়াকের এইচপি ক্যালকুলেটর এবং জবসের ভক্সওয়াগন ভ্যান।
এই সম্পদটুকুই বিক্রি করে যা ডলার পাওয়া গিয়েছিল,সেটি দিয়েই শুরু হয়ে গেল অ্যাপলের যাত্রা।
মনে রাখতে হবে অ্যাপল আই তৈরি করার জন্য তাঁরা কম্পিউটার বানিয়েছিলেন একটি ভাড়া করা গ্যারেজে। আসলে বীজটা বপন করা দরকার। বীজ বপন করে সেখানে জল দিতে হবে, দিতে হবে সার। বীজ বপন করার সেই সাহসটা চাই আগে।
কেউ কি জানত তখন গ্যারেজ থেকে শুরু হওয়া সেই প্রতিষ্ঠান একদিন বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হয়ে উঠবে!
ওয়ালমার্ট
ওয়ালমার্টের প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ওয়ালটন যখন তাঁর প্রথম দোকান চালু করেন, তখন ১৯৪৫। শুনলে অবাক হবেন, একমাত্র সদিচ্ছা ছাড়া তাঁর পুঁজি বলতে আর কিচ্ছু ছিল না। ব্যবসা পরিচালনা করার জন্যে জিনিস কেনার জন্য তিনি তাঁর শ্বশুরের থেকে ২৫ হাজার ডলার ঋণ নিয়েছিলেন।
ঋণ দিয়ে ব্যবসা শুরুর প্রথমেই তাঁর দোকান সাফল্যের মুখ দেখে ফেলে। ১৯৬২ সালে চালু হওয়ার পর ১৯৭৬ সালের মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানের মূল্য দাঁড়ায় ১৭৬ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
মূলত সদিচ্ছা, আর কিছু অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন! তাছাড়া যাঁদের পরিবার ব্যবসায়ী নয়, কিংবা যাদের কোন ধরনের সাহায্য করার কেউ নেই, তাঁরা একটা ব্যবসার আগাগোড়া ততটা ভালো নাও জানতে পারেন। কিন্তু শুরু করে দিন খুব কম পুঁজি দিয়ে, কিন্তু ঋণ করবেন না। আর ভাববেন না যে বড় দোকানই দিতে হবে। ছোট থেকে বড় হোন, দিন যেতে যেতে অভিজ্ঞতা বাড়তে থাকবে। এবং সফল একজন হবেন।