ঢাকা: ছোট্ট ছোট্ট মেয়েগুলো দেখিয়ে দিল আকাশ ছোঁয়া কোনো ব্যাপার না। শুধু নিজের মনের দুরন্ত সাহস আর এগিয়ে যাওয়ার স্পৃহা। পুরুষতান্ত্রিকতার মুখে লাথি মেরে বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা দেখাল আমরা পারি।
সব সমালোচনাকে পেছনে ফেলে এগিয়েছে তারা। একটি বিষয় তো অবশ্যই উল্লেখ করতে হয় নারী ঘরের বাইরে পা রাখলেই কথা হয়। পে কী করছে, কোথায় যাচ্ছে এসব নিয়েই কূটকাচালি চলে। কিন্তু যারা এগুলোকে হেলায় ঠেলে বেরিয়ে যায় তারাই পারে।
নারী হয়েও ফুটবল খেলার জন্যে একসময় প্রচুর কটু কথা হজম করতে হয়েছে কৃষ্ণা রাণী সরকারকে (krishna rani sarkar)। কিন্তু কান দেননি তিনি। তাই আজ তিনি জয়ী। সেই কৃষ্ণা (krishna) এখন সেরা নারী ফুটবল খেলোয়াড়। তাঁর জোড়া গোলেই সাফ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের প্রত্যন্ত অঞ্চল গোপালপুর (gopalpur) উপজেলার শিমলা ইউনিয়নের উত্তর পাথালিয়া গ্রামের বাসুদেব সরকার এবং নমিতা রাণী সরকার দম্পতির মেয়ে জাতীয় নারী ফুটবল দলের স্ট্রাইকার কৃষ্ণা রাণী সরকার (krishna rani sarkar)।
দুই ভাইবোনের মধ্যে বড় হলেন কৃষ্ণা। ছোট ভাই পলাশ সরকার ঢাকার গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে প্রথমবর্ষে অধ্যয়নরত বলে জানা গিয়েছে। কৃষ্ণা (krishna) বর্তমানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। এর আগে গোপালপুর সূতী ভিএম পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি সম্পন্ন করেন কৃষ্ণা রাণী সরকার (krishna rani sarkar)।
এবং ফুটবল পরিচিতিও পায় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে।
কৃষ্ণার মা নমিতা রাণী সরকার আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘আমার মেয়ের ফুটবল খেলা নিয়ে যারা একসময় কটু কথা বলতো, এখন তারাই আসছেন অভিনন্দন জানাতে। এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।’ বাংলায় একটি প্রবাদ আছে নিন্দা ফুল পিনতে হয়। সেটাই হয়েছে।
কৃষ্ণার বাবা বাসুদেব সরকার বলেন, ‘শৈশব থেকেই ফুটবল খেলায় আগ্রহী ছিল কৃষ্ণা (krishna )। ফুটবল খেলায় আগ্রহ আর কৌশল দেখে গোপালপুর সূতী ভি এম স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লতিফ আর বাপন স্যার ওকে বেশ উৎসাহ জুগিয়েছেন। সার্বিক সহযোগিতা করেছেন বর্তমান গোপালপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ঠান্ডু। তাদের উৎসাহ, অনুপ্রেরণা আর সহযোগিতায় আমার মেয়ে কৃষ্ণা রাণী সরকার এখন দেশের গর্ব।’
সোমবার তথা ১৯ সেপ্টেম্বর নেপালের কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে ৩-১ গোলের ব্যবধানে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। জয় জয়কার চারদিকে। প্রশংসা করেছেন তসলিমা নাসরিন।