অসম্ভব ব্যক্তিত্বের অধিকারী বাঙালি হৃদয়ের আইকন মহানায়ক উত্তম কুমারের জন্ম আজ থেকে ৯৩ বছর পূর্বে। ২০১৯ সালের ৩ আগস্ট তাঁর ৯৪ তম পালন করছে বাংলা। উত্তম কুমার ছিলেন, আছেন, থাকবেন। আরো বলা যায় ভিনি ভিডি ভিসি। এলেন দেখলেন জয় করলেন অবলীলায়। কোন তাড়া নেই, হা-হুতোশ নেই। আছে কেবল অন্তরঙ্গতা, নিবিড়ে ভালবাসার মতো একটি মন।
আজ সকালে টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপোর সামনে মহানায়কের মূর্তিতে মাল্যদান করেছেন ‘উত্তম স্মৃতি সংসদ’–এর পক্ষ থেকে। উপস্থিত ছিলেন ‘শিল্পী সংসদ’–এর সভানেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, ‘আর্টিস্ট ফোরাম’–এর সম্পাদক অরিন্দম গাঙ্গুলি প্রমুখ। এছাড়া সারা কলকাতায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানসূচীর মাধ্যমে আড়ম্বরপূর্ণভাবে পালন করা হবে উত্তম জন্মবার্ষিকী।
কে প্রথম কাছে এসেছি/কে প্রথম চেয়ে দেখেছি/কিছুতেই পাই না ভেবে/কে প্রথম ভালোবেসেছি-তুমি না আমি!
অথবা-
সূর্য ডোবার পালা আসে যদি আসুক বেশ তো/ গোধুলির রঙে হবে এ ধরনী স্বপ্নের দেশ তো/বেশ তো, বেশ তো।
আবার-
যদি হই চোরকাটা ওই শাড়ির ভাঁজে/দুষ্টু যে হয় এমন কষ্ট তারই সাজে/ যদি হই কাঁকন তোমার ওই হাতে/রিনিঝিনি বাজবো আমি দিনে রাতে/চেয়েও আমায় চাওনা যে-
মনের ক্যানভাসে ভেসে উঠছে সদাহাস্য সরলতা মাখা মনে-প্রাণে বাঙালি উত্তম কুমারের মুখখানা, তাই না বন্ধুরা?
এই গান সব বয়সী বাঙালির প্রিয় গান। মনকে সবুজের চাদরে মুড়ে ফেলে গানগুলো। এমনি চিত্তাকর্ষক!
উত্তম কুমারের প্রকৃত নাম অরুণ কুমার চ্যাটার্জি। ১৯২৬ সালের আজকের এই দিনে তিলোত্তমা কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। কলকাতার সাউথ সাবারবান স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। ভর্তি হন গোয়েঙ্কা কলেজে। মধ্যবিত্ত পরিবারে সংসারের হাল ধরার জন্যে গ্র্যাজুয়েশন শেষ না করেই কলকাতা পোর্টে কেরানীর চাকরি শুরু করেন।
জীবনে প্রচুর পরিশ্রম করেছেন তিনি।
একসময় মঞ্চে কাজ করার সময়ই অভিনয়ের প্রেমে পড়েন। ‘মায়াডোর’ নামের একটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান কিন্তু শেষপর্যন্ত সেটি মুক্তি পায়নি। উত্তম কুমারের প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘দৃষ্টিদান’। উত্তম কুমার সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবিতে অভিনয় করে। এই ছবিতে প্রথমবারের মতো তার সঙ্গে জুটিবদ্ধ হয়েছিলেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন। সেই থেকেই ইতিহাস সৃষ্টি শুরু। বাংলা চলচ্চিত্রে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং সফল জুটি উত্তম-সুচিত্রা। দুজনেরই বিয়ের পর চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটেছে।
ভার্সেটাইল অভিনেতা উত্তম কুমার বারবার নিজেকে ভেঙেছেন ফের গড়েছেন। তাঁর কোন ক্ষান্তি নেই, নেই ক্লান্তি।
কিংবদন্তী মাহনায়কের জীবনাবসান ঘটে ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেন।