নয়াদিল্লি: শুধু ভারত নয়, বাংলাদেশেও বোদ্ধারা এ আর রহমানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন। বলা যায় দুই দেশের জনগণই প্রতিবাদ করছেন।
পিপ্পার গান ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গান নিয়ে তুলকালাম অবস্থা। এবং হবারই কথা।
রাজা মেনন পরিচালিত, পিপ্পা, ব্রিগেডিয়ার বলরাম সিং মেহতার বই, দ্য বার্নিং চ্যাফিস-এর উপর ভিত্তি করে অভিনীত। পিপ্পা যুদ্ধবিষয়ক চলচ্চিত্রের ধারায় নতুন সংযোজন।
ছবিটি দেখেছেন তসলিমা নাসরিন।
তিনি ফেসবুকে এই নিয়ে শেয়ার করলেন কিছু কথা।
“পিপ্পা সিনেমাটি দেখলাম। বলরাম সিং মেহতা রচিত আত্মকথার ওপর ভিত্তি করে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন রাজা মেনন। বলরাম সিং ভারতের সেনাবাহিনীতে ছিলেন উনিশশ’ একাত্তর সালে।
তিনি যেভাবে পাকিস্তানী আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হয়েছেন, পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন করতে সাহায্য করেছেন, সে কাহিনী তো আছেই, তার ভাই এবং বোনও কীভাবে যুক্ত হয়েছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে, সে কাহিনীও আছে পিপ্পাতে।
সিনেমাটি সিনেমা হিসেবে অসাধারণ নয়। তথ্যের কিছু ভুল ত্রুটি নিয়েও সিনেমাটি, আমি বলবো, জরুরি একটি সিনেমা। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রচুর সিনেমা তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে।
সিনেমাগুলোয় মূলত দেখানো হয়েছে মুক্তিযোদ্ধারা কী করে স্বাধীন করেছেন দেশ। কিন্তু ভারতীয় সেনারা যদিও বাংলাদেশকে স্বাধীন করার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন, ভারতীয় চিত্র পরিচালকেরা এ নিয়ে উল্লেখযোগ্য কোনও সিনেমা নির্মাণ করেননি।
পিপ্পার মতো সিনেমা আরও হওয়া উচিত, হলে বাংলাদেশের ভারতবিরোধী লোক, যারা জানেই না মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান সম্পর্কে, তারা অন্তত ইতিহাস কিছুটা হলেও জানবে। বাংলাদেশের ইতিহাস বই থেকে তো ভারতীয় সেনাদের আত্মত্যাগের কথা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
পিপ্পা সিনেমায় কারার ওই লৌহ কপাট গানটি নিতান্তই অনুল্লেখযোগ্য গান হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। গানটির সুর তো নষ্টই করা হয়েছে, সম্পূর্ণ গাওয়াও হয়নি। গীতিকারের তালিকায় কাজী নজরুল ইসলামের নামও দেওয়া হয়নি।
এত প্রতিবাদ হচ্ছে গানের সুর বিকৃতি নিয়ে, আমি অবাক হয়ে যাই এখনও পিপ্পা সিনেমার প্রযোজক, পরিচালক, সঙ্গীত পরিচালক কেউই কোনও বিবৃতি দিচ্ছেন না”।