সস্তার ইন্টারনেটের দুনিয়ায় ইউটিউবে ভিডিও দেখার প্রবণতা প্রচণ্ড বৃদ্ধি পেয়েছে। তা মন্দ নয়। কারণ বিজ্ঞানের দুটো দিক। কিন্তু সার্চে গিয়ে মন্দ মানসিকতাসম্পন্ন যারা, কেউ আড়ালে-আবডালে কেউবা সরাসরি নগ্ন ভিডিওর প্রতি আকর্ষিত! আর সেই আকর্ষণের ফলে অভ্যাসবশে কিংবা অজান্তেই মুখ দিয়ে যে অশ্লীল ভাষা বেরিয়ে আসে, তা অস্বীকার করতে পারবেন না যাঁরা দেখছেন তাঁরা। অশ্লীলতার টার্গেট তো চিরদিনই করা হয় একটি মেয়েকে। কারণ মেয়েরা সমাজে বিকৃতকাম পুরুষদের কাছে যৌনবস্তু ছাড়া আর কিছুই নয়! যৌনতা ছাড়া কিছু ভাববার মানসিকতা অন্তত তাদের নেই। থাকলে দেশে মর্মান্তিকভাবে মেয়েরা, শিশুসন্তানের জীবন এভাবে আক্রমণের বলি হতো না। আজকাল তো পুরুষের যৌন লালসা থেকে বাদ যাচ্ছে না গরু-ছাগলও।
পুরুষের কাম-লালসার বিরুদ্ধে মোক্ষম আঘাত হেনেছেন টলিউডের বিখ্যাত অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র। যেন জোঁকের মুখে নুনের ছিটে পড়েছে!
সম্প্রতি অভিনেত্রী শ্রীলেখার ইউটিউব চ্যানেল ‘আমি শ্রীলেখা’ আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তি লাভ করেছে। চ্যানেলে বৃদ্ধি পাচ্ছে সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা।
এরই মধ্যে শ্রীলেখা মুখোমুখি হলেন এমন এক ইচ্ছুক সাবস্ক্রাইবারের, যিনি নায়িকার নুড কনটেন্ট পেলেই সাবস্ক্রাইব করবেন বলে সরাসরি কমেন্ট করেন!
জনৈক ব্যক্তি লিখেছেন, “ভিডিওতে ন্যুড কনটেন্ট পাব তো? তবেই আপনার চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করব।”
ব্যক্তির এমন লালসাকে পূরণ করার জন্যে শ্রীলেখা মিত্র ব্যঞ্জনার সাহায্যে আস্ত একটি ভিডিও তৈরি করে ফেললেন। মৃৎশিল্পের আঁতুড়ঘর কুমোরটুলিতে এসে যে সংলাপগুলো তিনি বলেছেন, যৌন কামনায় পূর্ণ যে সব পুরুষ, তাঁদের আঁতে ঘা দিতে বাধ্য।
শারদীয়া দুর্গাপূজা আসন্ন। কুমোরটুলির দম ফেলার ফুরসত নেই। শ্রীলেখা দেখিয়ে চলেন মাটির তৈরি নগ্ন প্রতিমাগুলো। এরপর চলে যান মহিলা মৃৎশিল্পী চায়না পালের কাছে।
“তুমি তো এখানে প্রথম মহিলা শিল্পী। চারদিকে তো পুরুষশাসিত সমাজ। সবজায়গায় পুরুষরা ডোমিনেট করছে। একটু বেগ পেতে হয়নি?”
চায়নাদেবী জানালেন, রাস্তায় যখন ঠাকুর রাখতেন, তখন সেখানে প্রতিমা রাখার ক্ষেত্রেও পুরুষদের আপত্তি ছিল। যেহেতু শিল্পী একজন মহিলা।
শ্রীলেখার ফের প্শ্ন “সব পুরুষ কি অসুরের মতো, নাকি কার্তিক-গণেশের মতো ভাল পুরুষও ছিল? শিবের মতো যারা চায় তুমি এগিয়ে যাও, আমরা আছি।”
শিল্পী জানালেন “সামনে বলতো, কিন্তু পেছনে তাঁদের মুখোশটা কেমন ছিল জানি না।”
কেন এমন নগ্নতা খোঁজার মানসিকতা এভাবে প্রকাশ্যে আসছে? এনিয়ে অভিনেত্রী কথা বলেন মনোবিদের সঙ্গে। আর ভিডিওর শেষে বলেন, “ন্যুড কনটেন্টও দিলাম। বিশেষজ্ঞের পরামর্শও দিলাম। এবার সাবস্ক্রাইবটা করে ফেলুন।”
শ্রীলেখা মিত্রের এমন নুড কনটেন্ট করা নিয়ে কিছু কিছু নেটিজনদের সমালোচনা কিন্তু চলছেই। তাঁরা মনে করছেন, শ্রীলেখা তো নুড কনটেন্ট দিলেনই। তবে কি তিনি প্রতিমাকেও ‘সেক্স অবজেক্ট’ হিসেবে দেখতে চান?
আসলে জহুরীই জহর চেনে। অভিনেত্রী শ্রীলেখা কেন স্বয়ং মায়ের নগ্ন মূর্তি দেখালেন, তা বুঝবেন মুক্তমনা-সু-মানসিকতাসম্পন্ন পুরুষেরাই।
নারীই তো সৃষ্টিকারী। অসুর দমনের জন্যেই তাঁর আগমণ। দুর্গা নারী। আমরা প্রতি বছর মর্ত্যে তাঁর আগমণ কত আনন্দে পালন করি, তাঁকে ভক্তিভরে পূজা করি।
অন্যদিকে প্রদীপের উল্টোদিকে কি হচ্ছে? ধর্ষণ, খুন! অর্থাৎ এক নারীকে আমরা পূজা করছি। আর রক্ত-মাংসের নারীকে করছি ধর্ষণ! সমাজের নারীকে আমরা কখনো ‘মায়ের জাত’ বলে ভাবতেই শিখিনি। শিখতে চাইও না! ব্যাপারটা এমনই।
সমাজের চারদিকে গোচরে-অগোচরে ঘুরে বেড়াচ্ছে অসুর। যৌন পিপাসুদের সুকৌশলে কটাক্ষ করেছেন শ্রীলেখা। যা আদরণীয়।