২০২০ সাল, ১৯ জানুয়ারি। বাংলা চলচ্চিত্র জগতের দিকপাল, বিশিষ্ট আবৃত্তিকার সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ৮৫-তে পা দিলেন।
৮৫ বছরেও যেন তিনি আঠারোর সেই টগবগে যুবক। মন সর্বদা সৃষ্টিশীলতায় মশগুল। অনুভব করে চলেছেন জীবনের প্রতিটি ক্ষণ আনন্দের সাথে।
নিজেকে ছুঁয়ে দেখেন বারবার ভালোবাসার মাঝে।
প্রবীণ বলা সঙ্গত অভিভাবক সৌমিত্রের শুভজন্মদিনে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন টলিউড অভিনেতা দেব।
শুভ জন্মদিন ছানা দাদু ??? pic.twitter.com/8AwngaDz7g
— Dev (@idevadhikari) January 19, 2020
৬০ বছরের ওপর সৌমিত্র চ্যা অভিনয় জীবন। করেছেন ৩০০-রও বেশি ছবি।
তিন দশকে সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে ১৪টি ছবি। শর্মিলা ঠাকুরের সঙ্গে ‘অপুর সংসার’ দিয়ে শুরু হয়েছিল পথ চলা।
করেছেন পরপর সুচিত্রা সেন, অপর্ণা সেন, মাধবী মুখোপাধ্যায়, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, লিলি চক্রবর্তী, মমতাশঙ্কর হয়ে রাধিকা আপ্তে, মিমি চক্রবর্তী, ইন্দ্রাণী হালদার, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, গার্গী রায়চৌধুরীর সঙ্গে।
আসলে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ব্যক্তিত্বসম্পন্ন; হাসিখুশিতে মশগুল থাকা একজন অসাধারণ মানুষ।
অভিনেতা দেব তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন কখনো কখনো এমনও মনে হয়, যে সব চরিত্রে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা অভিনয় করে থাকেন সবসময় সেগুলো নিজের মনের মতো নয়। সেক্ষেত্রে কিভাবে মানিয়ে নেয়া যায়?
সৌমিত্রবাবুর অসাধারণ উত্তর, আসলে অভিনয় শব্দের অর্থই হলো পছন্দ না হওয়া জিনিসগুলোকেও ভালো লাগছে বলেই ফুটিয়ে তোলা! আহা!
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের আদি বাড়ি বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার শিলাইদহ। তবে পিতামহের আমল থেকেই তাঁদের পরিবার পশ্চিম বঙ্গের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে স্থায়ীভাবে বসতি গড়েন।
সে বাড়িতেই অভিনেতার জন্ম। কৃষ্ণনগরের সেন্ট জন্স স্কুলে তার পড়াশোনায় হাতেখড়ি। বাবার কর্মস্থল পরিবর্তনের সাথে সাথে বদল হতে থাকে স্কুল। হাওড়া জেলা স্কুলে মাধ্যমিক শেষ করেন। এরপর কলকাতার সিটি কলেজ থেকে আইএসসি আর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বি এ অনার্স সম্পন্ন করেন। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কলেজ অফ আর্টসেও দু বছর পড়াশোনা করেন তিনি।
স্বনামধন্য অভিনেতা ভূষিত হয়েছেন দেশি-বিদেশি অসংখ্য সম্মানে। ফ্রান্স সরকারের কাছ থেকে সে দেশের শিল্পের সর্বোচ্চ সম্মান ‘অর্ডার অফ আর্টস এন্ড লেটার্স’ লাভ করেন। ইতালি সরকার প্রদান করেছে ‘লাইফ টাইম অ্যাচিভম্যান্ট’। ভারতের কাছ থেকে পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সম্মাননা পদ্মশ্রী ও পদ্মভূষণ। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাঁকে বঙ্গবিভূষণ সম্মানে ভূষিত করে। পেয়েছেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মান দাদাসাহেব ফালকে।