নয়াদিল্লিঃ Iranএ গত আড়াই মাস ধরে টানা চলছে হিজাব বিরোধী আন্দোলন। অবশেষে সেদেশে সাধারণ মানুষের প্ৰতিবাদের জেরে পিছু হটল ইরানের সরকার। হিজাব নিয়ে ‘নীতি পুলিশি’ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিল তেহেরান। রবিবার Iranএর অ্যাটর্নি জেনারেল মহম্মদ জাফর মন্তাজেরি বলেন, “নীতি পুলিশির সঙ্গে বিচার বিভাগের কোনও সম্পর্ক নেই। সেই কারণেই এই ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।”
সেদেশে প্ৰচলিত নারীর সাজপোষাকের কড়া নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগে ‘নীতি পুলিশি’ বাহিনীর অত্যাচারে চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর কুর্দি বংশোদ্ভূত মাহসা আমিনি (Mahsa Amini) নামের ২২ বছরের তরুণীর মৃত্যু হয়। তারপর থেকেই ইরানে হিজাব বিরোধী প্ৰতিবাদে নামে সাধারণ মানুষ। হিজাব নিয়ে ‘নীতি পুলিশি’ বন্ধ করার সিদ্ধান্তে সেদেশের নাগরিক প্ৰথম নৈতিক জয় পেয়েছেন বলে মনে করছেন প্ৰতিবাদী জনতা।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ থেকে ইরানে চালু ছিল এই ‘নীতি পুলিশি’ ব্যবস্থা। তৎকালীন কট্টরপন্থী প্রেসিডেন্ট মেহমুদ আহমদিনেজাদের নির্দেশে চালু হয় এই ব্যবস্থা। ইরানি ভাষায় এর নাম দেওয়া হয়েছিল ‘গস্তে-ই-এরশাদ’। এর জন্য একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছিল। যাঁদের কাজ ছিল নারীদের উপর নজরদারি করা। হিজাব ছাড়া কোনও মহিলা রাস্তায় বের হলেই, তাঁদের উপর নেমে আসত ‘নীতি পুলিশি’-র খাঁড়া। ঠিক যেমনটা হয়েছিল ২২ বছরের মাহশা আমিনির ক্ষেত্রে।
Iranএর স্থানীয় মিডিয়া রবিবার জানিয়েছে, দেশটির কঠোর নারী পোষাক কোড লঙ্ঘনের অভিযোগে মাহসা আমিনীকে গ্রেপ্তারের কারণে দুই মাসেরও বেশি বিক্ষোভের পর ইরান তার নৈতিকতা পুলিশকে বাতিল করেছে।
তেহরানে নীতি পুলিশ Mahshaকে গ্রেপ্তারের তিন দিন পর তাঁর মৃত্যু হয়। তারপর থেকেই হিজাব বিরোধী আন্দোলনে জ্বলে ওঠে ইরান।
প্ৰতিবাদীদের আন্দোলন বন্ধ করতে দমন নীতি নিতে দেখা গিয়েছে ইরান প্ৰশাসনকে। ইরানি গার্ডের বিরুদ্ধে উঠেছে নির্বিচারে গুলি চালানোর অভিযোগ। ইরানের মানবাধিকার কমিশনের দাবি, এখনও পর্যন্ত এই আন্দোলনে ৪৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এবার নতুন করে হিজাব আইন নিয়ে পর্যালোচনা শুরু করেছে Iran সরকার। ভবিষ্যতে বাধ্যতামূলক হিজাব পরার ক্ষেত্রে বড়সড় বদল আনা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন Iran প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি।