ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে (Sheikh Mujibur Rahman) পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ২৬ মার্চ গ্রেফতার করে পাকিস্তানের একটি কারাগারে নিয়ে বন্দি করে রেখেছিল।
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দিয়ে তাকে ফাঁসির হুকুম দেওয়া হয়েছিল। এমনকি জেলাখানার পাশে কবরও তৈরি করা হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামি লিগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী Sheikh Hasina বলেছেন,একথা বলেন।
আওয়ামি লিগ সভাপতি Sheikh Hasina বলেন, জাতির পিতা ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে এসে ঘোষণা দিয়েছিলেন, উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চান তিনি।
সেদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু যে কথাগুলো বলেছিলেন পরে একে একে সব করেছিলেন তিনি। মাত্র ৯ মাসে সংবিধান দিয়েছিলেন। পাকিস্তানের সংবিধান দিতে ১১ বছর লেগেছিল।
Sheikh Hasina বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা বিদেশি ব্যক্তি ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার জন্য Indira Gandhi দেশে দেশে ধরনা দিয়েছিলেন।
বিভিন্ন দেশের চাপেই শেষপর্যন্ত ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিয়েছিল। তিনি বলেন, আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম কিন্তু আমাদের বিজয় অধরা ছিল। ১০ জানুয়ারি যখন বঙ্গবন্ধু আমাদের মাঝে ফিরে আসেন, তখন যেন আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণ হলো।
বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে আগে জনগণের কাছে যান। পরিবারের কাছে পরে গিয়েছিলেন। তিনি যখনই সুযোগ পেয়েছেন, তখনই এ দেশের মানুষের জন্য কিছু না কিছু করে গেছেন। আওয়ামি লিগ সভাপতি বলেন, দেশের মানুষকে ভালোবাসতে শিখেছি বাবার কাছ থেকে। দেশের মানুষকে উন্নত জীবন দেওয়াই ছিল তার (বঙ্গবন্ধু) একমাত্র লক্ষ্য।
যখনই সুযোগ পেয়েছেন বাঙালির জন্য কিছু করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন এই ঘুণে ধরা সমাজ ভেঙে দিয়ে নতুন সমাজ গড়তে। চেয়েছিলেন ব্রিটিশ আমলে গড়ে তোলা প্রশাসনিক ব্যবস্থা, পাকিস্তানি শাসনব্যবস্থা ভেঙে দিয়ে তৃণমূলের মানুষকে শক্তিশালী করা।
গ্রামের মানুষের কাছে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, তাদের অথনৈতিক অধিকার, তাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অধিকার পৌঁছে দেওয়া ছিল জাতির পিতার লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য সামনে নিয়েই তিনি দেশকে গড়ে তুলছিলেন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রবৃদ্ধি ৯ ভাগের ওপরে বঙ্গবন্ধুর আমলেই একবার উঠেছিল। এরপর আর কেউ পারেনি। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে এভাবে কেউ গড়ে তুলতে পারে সেই নজির আর কোথাও নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, একমাত্র বঙ্গবন্ধুর দৃঢ়তার কারণেই সেটা সম্ভব হয়েছে।
তার (বঙ্গবন্ধু) ভরসা ছিল একমাত্র এ দেশের মানুষ। এক সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করেছিল- কিছু তো নেই, দেশ কীভাবে চালাবেন? তিনি বলেছিলেন, আমার মাটি আছে, মানুষ আছে, সেটা নিয়েই দেশ গড়ে তুলব। সেটা তিনি প্রমাণ করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন- শুধু তাই নয়, পৃথিবীর ইতিহাসে যে সমস্ত দেশ যুদ্ধ করেছে তাদের যে মিত্র শক্তি সহযোগিতা করেছে, কোনো দেশ থেকে সেই মিত্রশক্তি যায়নি। এখনো বহু দেশে তাদের মিত্রশক্তি রয়ে গেছে। বাংলাদেশ একটা ব্যতিক্রম।
ভারতীয় সৈন্যরা তাদের রক্ত দিয়ে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমাদের বিজয় এনে দিয়েছিল। স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধু যখন ইন্দিরা গান্ধীকে বললেন- আপনারা সেনাবাহিনী কবে ফেরত নেবেন? ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন, আপনি যখন বলবেন তখনই। এক বছরের মধ্যে ভারতের সেনাবাহিনী ফেরত গিয়েছিল।
আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামি লিগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।