ঢাকা: বাংলাদেশে সনাতন ধর্মের মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি আজ শুভ জন্মাষ্টমী। হিন্দু সম্প্রদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে জন্মাষ্টমী উদযাপন করছেন। বৃহস্পতিবার সব অকল্যাণ ও অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে অন্তরাত্মাকে জাগ্রত করার শপথ নেন কৃষ্ণপ্রেমীরা।
বাংলাদেশে শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ ও মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে কেন্দ্রীয়ভাবে তিনদিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্য রয়েছে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়।
শুক্রবার সকালে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় গীতাযজ্ঞ, বিকেলে ঐতিহাসিক জন্মষ্টমী শোভাযাত্রা ও রাতে তিথি অনুযায়ি কৃষ্ণ পূজা। শনিবার বিকেলে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়াও ঢাকা রামকৃষ্ণ মিশন, স্বামী ভোলানন্দ গিরি আশ্রম, প্রভু জগদবন্ধু মহাপ্রকাশ মঠ, রাধামাধব জিও দেব বিগ্রহ মন্দির, বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান, রাধা গোবিন্দ জিও ঠাকুর মন্দির, শিব মন্দির, রামসীতা মন্দির ও মাধব গৌড়ীয় মঠসহ বিভিন্ন মন্দির, পূজামন্ডপ ও ধর্মীয় সংগঠন জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন চলছে।
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। বাংলাদেশ সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষ যুগ যুগ ধরে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। সংবিধানে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ সরকার। তবে করোনাভাইরাস বাস্তবতায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে সরকারি ছুটির দিন। দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। হিন্দু পুরান মতে, দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করতেই পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এ পৃথিবীতে আবির্ভূত হন।
অত্যাচারীর বিরুদ্ধে দুর্বলের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শান্তিহীন পৃথিবীতে শান্তি আনতেই শান্তিদাতা শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব। তার শিক্ষা হলো-অন্যায়কে পরাভূত করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। তার জন্মের সময় এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ড পাপ ও অরাজকতায় পরিপূর্ণ ছিল।
নানা ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে শ্রীকৃষ্ণ মানব জাতির কাছে জীবন ধারণের অনন্য উদাহরণ রেখে গেছেন। ইতিহাসে তিনি যাদবকৃষ্ণ ও দর্শনশাস্ত্রে সচ্চিদানন্দ বিগ্রহ কৃষ্ণ। শ্রীমদ্ভগবত গীতায় তিনি অবতারকৃষ্ণ, দার্শনিক কৃষ্ণ, পুরুষোত্তম কৃষ্ণ।
ঈশ্বরতত্ত্বের মহান প্রতীক শ্রীকৃষ্ণ বেদে ঋষিকৃষ্ণ, দেবতাকৃষ্ণ। মহাভারতে তিনি রাজর্ষি কৃষ্ণ, শাসক ও প্রজাপালক কৃষ্ণ, অত্যাচারী দমনে যোদ্ধাকৃষ্ণ। তার বাণী সমগ্র বিশ্বকে হাজার হাজার বছর ধরে আলোড়িত করছে।