ঢাকা: ফেসবুকে একটি পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে সুনামগঞ্জ (sunamganj) জেলার শাল্লা (shalla) উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাশকে (jhumon das) (২৬)কে ফের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা করেছে।
গত মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ ঝুমনকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। পরে রাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে ওই মামলায় তাঁকে (jhumon das) গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
শাল্লা (shalla) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ঝুমন দাশ কয়েক দিন আগে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে মসজিদ ও মন্দির নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ২২ মার্চ একই থানায় পুলিশ বাদী হয়ে ঝুমনের (jhumon das) বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা করেছিল। গত বছরের ১৬ মার্চ ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ তুলে ১৭ মার্চ নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা চালানো হয়।
তার আগে ১৬ মার্চ রাতে ঝুমনকে (jhumon das) আটক করা হয়। পরে ঝুমনের (jhumon das) বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে তিনি কারাগারে ছিলেন।
ঝুমন দাশের (jhumon das) স্ত্রী সুইটি রানী দাশ বলেন, চার দিন ধরে তাঁদের গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুলিশ অবস্থান করছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাঁদের বাড়িতে যান।
তাঁরা ঝুমনকে (jhumon das) বলেন, এলাকার নোয়াগাঁও বাজারে পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঝুমনের সঙ্গে কথা বলবেন। এরপর ঝুমন (jhumon das) ও তিনি (সুইটি) নৌকায় ওঠেন। কিন্তু পরে নোয়াগাঁও বাজার না গিয়ে তাঁদের শাল্লা থানায় নেওয়া হয়।
সারা দিন তিনি ঝুমনের (jhumon das) সঙ্গে থানায় ছিলেন। পরে রাত নয়টার দিকে তিনি ঝুমনকে (jhumon das) থানায় রেখে বাড়িতে ফিরে আসেন। বুধবার সকালে থানায় ফোন দিলে পুলিশ তাঁকে জানায়, ঝুমনকে (jhumon das) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে সুইটি দাশ বলেন, তিনি ঝুমনকে (jhumon das) ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন। ঝুমন তাঁকে জানিয়েছেন, কেউ ক্ষুব্ধ হওয়ার মতো কিছু তিনি লেখেননি। তবে সম্প্রতি নারীদের পোশাক নিয়ে বিতর্কের বিষয়ে ঝুমন দু-একটি পোস্ট দিয়েছেন।
ঝুমনের মা নিভা রানী দাশ বলেন, ‘পুলিশ বলছে, ঝুমন নাকি ফেসবুকে আবার কী লিখেছে! এ কারণে তাকে থানায় নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দিনে ও রাতে বারবার পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। বুধবার সকালে পুলিশ জানিয়েছে, ঝুমনের বিরুদ্ধে আবার মামলা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ জানান, ঝুমন দাশের বিরুদ্ধে থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা হয়েছে। এ মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বুধবার তাঁকে আদালতে নেওয়া হবে।
গত বছর হেফাজতে ইসলামের তৎকালীন নেতা মামুনুল হককে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে শাল্লা থানায় ঝুমন দাশের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলায় হয়।
১৬ মার্চ ফেসবুকে দেওয়া ওই পোস্টের জেরে ১৭ মার্চ সকালে নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা চালানো হয়। ঝুমন দাশকে ১৬ মার্চ রাতেই আটক করে পুলিশ। এরপর ২২ মার্চ শাল্লা থানায় তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে পুলিশ।
এই মামলায় ২৩ মার্চ ঝুমনকে (jhumon das) গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ৬ মাস ১২ দিন কারাবাসের পর গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জ (sunamganj) কারাগার থেকে মুক্তি পান ঝুমন। তাঁর বাড়ি শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে।