থার্টি ফাস্ট নাইটকে ঘিরে ঢাকাসহ দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সরকারের পক্ষ থেকে থার্টি ফাস্ট নাইটে কোনো উন্মুক্ত স্থানে বা বাড়ির ছাদে গান-বাজনা ও আতশবাজি ফোটানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে। এছাড়াও রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা, উত্তরা ও ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নেয়া হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নাশকতাসহ অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা এড়াতে সাদা পোশাকে পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সদস্যরা কাজ করছে।
আর মাত্র ২ দিন। তারপর ২০১৯ সালকে বিদায় ও নতুন বছর ২০২০ সালকে বরণ। থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর অভিজাত হোটেলগুলোতে রয়েছে বিশেষ আয়োজন। থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে ঢাকাসহ সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। থার্টি ফার্স্ট ঘিরে কেউ যাতে উচ্ছৃঙ্খল হতে না পারে সেজন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দারা।
সূত্রমতে, থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে ঢাকায় বিপুল পরিমাণ মাদক আসছে। থার্টি ফার্স্ট নাইটের চাহিদার কারণে ফেনসিডিল, ইয়াবা, হেরোইন ও বিদেশি মদসহ নানা ধরনের মাদক মজুদ করা হচ্ছে। এর মধ্যে র্যাব-পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পৃথক অভিযানে বেশ কিছু চালান আটকও করেছে। কোনো ধরনের মাদক যাতে রাজধানীতে প্রবেশ করতে না পারে সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখছে র্যাব-পুলিশের গোয়েন্দা টিম। থার্টি ফার্স্ট নাইটে উচ্ছৃঙ্খলতা বা জনজীবনে উপদ্রব সৃষ্টির চেষ্টা কঠোর হস্তে দমনে পুলিশের পাশাপাশি কাজ করবে র্যাব সদস্যরা।
থার্টিফার্স্ট নাইটে সুনির্দিষ্ট কোনও ঝুঁকি নেই বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। তিনি বলেন, থার্টিফার্স্ট নাইটে সন্ধ্যার পর ঘরের বাইরে কনসার্ট বা যেকোনও ধরনের অনুষ্ঠানের ওপর আমাদের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে ঘরের মধ্যে, হোটেলে বা বদ্ধ জায়গায় করতে পারবে। সেক্ষেত্রে পুলিশ প্রয়োজনে নিরাপত্তা দেবে।
জাবেদ পাটোয়ারী আরো বলেন, থার্টিফার্স্ট পালনে টাইমিংয়ের ব্যাপারে ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একটি মিটিংয়ে নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছেন। বিভিন্ন জাতীয় ও গুরুত্বপূর্ণ দিবস যেমন: ১৪ ডিসেম্বর, ১৬ ডিসেম্বর, ২৫ ডিসেম্বর পালনের সময় আমরা যেরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করি, থার্টিফার্স্ট নাইটেও সেরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
তিনি বলেন, থার্টিফাস্ট নাইটে সুনির্দিষ্ট কোনও ঝুঁকি না থাকলেও সম্ভাব্য যেকোনও ঝুঁকি মাথায় রেখে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকি। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে আমরা পুলিশের প্রত্যেকটি ইউনিটকে নির্দেশনা দিয়েছি, থার্টিফার্স্ট নাইটের অনুষ্ঠানগুলো যাতে সঠিকভাবে হতে পারে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম জানান, থার্টি ফার্স্ট নাইটে রাতের বেলায় খোলামেলা কোনো অনুষ্ঠান করতে দেয়া হবে না। তা ছাড়া বিকাল ৫টার মধ্যে সব অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে। বিশেষ করে রাজধানীর সব মদের বার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অবশ্যই বারের মালিকদের বার বন্ধ রাখার জন্য সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। তবে থার্টি ফার্স্ট নাইট ঘিরে কোনো ধরনের নাশকতার শঙ্কা নেই। পুলিশ গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি স্পর্শকাতর জায়গায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, আসন্ন থার্টিফার্স্ট উদযাপন ঘিরে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী হামলা বা নাশকতার সুনির্দিষ্ট হুমকি নেই। তবে জঙ্গিরা বসে নেই। তারা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে চেষ্টা চালাচ্ছে।
তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নজরদারির কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে যখন জঙ্গি হামলা হয়, তখন আমাদের দেশেও জঙ্গিরা হামলা করতে চেয়েছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে।