ঢাকা: দুজনেই বিভিন্ন সময়ে আলোচনার খোরাক হন। সে নেগেটিভ বা পজেটিভ। দুজনেই দুইজগতের বাসিন্দা। একজন ক্রিকেটের আরেকজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের।
তবে এবার বাংলাদেশে (Bangladesh) একজন পুলিশ আধিকারিকের খুনের মামলার আসামি আরাভ খানের দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করতে গিয়ে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে পারেন। কেননা বাংলাদেশ জুড়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের- ডিএমপি ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ এ কথা বলেন।
তিনি জানান, স্বর্ণের দোকানের মালিক আরাভ খান পুলিশ খুনের আসামি বিষয়টি জানানো হয়েছিল সাকিবকে। কিন্তু তিনি দুবাইয়ে কেন গেলেন। এটি দুঃখজনক। তদন্তের স্বার্থে সাকিব ও হিরো আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
বুধবার (১৫ মার্চ) দুবাইয়ে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। তবে উদ্বোধনী মঞ্চে না উঠেই ১০ মিনিটের মধ্যে চলে যান তিনি।
একই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মঞ্চ মাতান দেশের আলোচিত ইউটিউবার আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম।
ডিবি প্রধান বলেন, আমাদের পুলিশের একজন মেধাবী আধিকারিক ছিলেন পরিদর্শক মামুন। তাকে শুধু হত্যাই করেনি। তার লাশ যেন না পাওয়া যায় সেজন্য কালিগঞ্জের জঙ্গলে ফেলে দিয়েছিল। এ ঘটনার পর মামলা হয়, যার তদন্ত করেছে ডিবি।
হত্যা মামলায় আসামি আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম পালিয়ে গেলেও নকল একজন আসামি জেলখানায় দেয় সে। পরে ডিবির তদন্তে নকল আসামির ঘটনা সামনে আসে।
এরমধ্যে মূল আসামি দুবাইয়ে স্বর্ণের দোকানের মালিক রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান ভারতে পালিয়ে যায়। সেখান থেকে ভারতীয় পাসপোর্টে দুবাই যায়। তিনি আরও বলেন, আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলাম একজন খুনি, সে একজন মেধাবী পুলিশ আধিকারিককে খুন করেছে।
মিডিয়াতেও অনেকের বলার পরেও সাকিবসহ অন্যান্য তারকারা খুনের মামলার আসামির ডাকে দুবাইয়ে গেছেন এবং তার স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনে যোগ দিয়েছেন। ডিবিপ্রধান জানান, আমরা ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে আলাপ করে ইন্টারপোলের সহায়তায় রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
আরাভ খানের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কতগুলো মামলার অভিযোগ রয়েছে জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, ১২টি ওয়ারেন্ট রয়েছে। মামলা রয়েছে, চার্জশিটও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আরাভ খানই যে রবিউল ডিবি কখন নিশ্চিত হয়েছে?
-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যখন কোনও মামলার চার্জশিট দেওয়া হয় তখন সব আসামি কে কোথায় আছে তা খোঁজ খবর নেওয়া হয়। আরাভ খানের বিভিন্ন ছবি প্রকাশ হয় এবং সাকিব আল হাসান টেলিভিশন ও ফেসবুকে ওই স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনের বিজ্ঞাপন দিচ্ছিলেন। সবকিছু মিলেই আমরা তথ্য পাই আরাভ খানই পুলিশ খুনের মামলার আসামি রবিউল ইসলাম।
ডিবিপ্রধান আরও বলেন, খুনের পর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নাম ধারণ করেন রবিউল ইসলাম। ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে তিনি এখন দুবাইতে অবস্থান করছেন। ক্রিকেটার সাকিব অথবা অন্য যারা গিয়েছেন দুবাইতে ডিবি কারও সঙ্গে কথা বলেছেন কি না।
এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশিদ বলেন, সাকিবসহ অন্যদেরও জানানো হয়েছে। সাকিব এবং হিরো আলম এখনো বিদেশে রয়েছেন। ডিবিপ্রধান বলেন, তদন্তের স্বার্থে আমরা যদি প্রয়োজন মনে করি তবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।