হোম কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশ না মানায় এবার ভ্রাম্যমান আদালত বাংলাদেশের ২০ জেলার মোট ২৪ জনকে আর্থিক জরিমানা করেছে।
সারা দেশে এ মুহূর্তে হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬ হাজার ৩শ ১৫ জন।
জামালপুরের হোম কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশ না মানায় ১০ হাজার টাকার জরিমানা করেছে সৌদি ফেরত এক মহিলাকে।
বুধবার তাঁকে জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত।
উক্ত মহিলা ১৪ মার্চ বাংলাদেশে ফিরে আসার পর নির্দেশ অনুযায়ী কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশ না মেনে বাইরে নিজের ইচ্ছানুযায়ী ঘোরাঘুরি করছিলেন।
জামালপুরে বর্তমানে মোট ২৯ জন প্রবাসি বাঙালি হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন।
অন্যদিকে কানাডাফেরত এক প্রবাসিকে ৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য যে, সারা বিশ্বকে ছারখার করে দেওয়া করোনা ভাইরাসের প্রবল শক্তি প্রতিরোধের জন্যে সার্কভুক্ত দেশগুলো ইতিমধ্যেই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সেরেছেন।
ভারত, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
আশ্চর্যজনক হলো, বাংলাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব রকমের জনসমাগম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জনগণের ধর্মীয় সমাবেশ বন্ধ হচ্ছে না কিছুতেই।
ভাইরাসের আক্রমণ থেকেও কী এ মুহূর্তে ঈশ্বর অথবা আল্লার মন্দির-মসজিদে যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের মানুষের কাছে?
এহেন সংকটকালেও জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা আসছে না!!
সরকারের, বিশ্ব সংস্থার কোন প্রকার নির্দেশ মানতে রাজি নন জনগণ। ফলে হোম কোয়ারেন্টাইনের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। কিন্তু আদৌ হোম কোয়ারেন্টাইনেও তাঁরা কতটুকু থাকছেন। ফলে এবার ভ্রাম্যমান আদালত কঠোর ব্যবস্থা হাতে নিতে বাধ্য হয়েছে। কারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া কোন ব্যক্তিগত বিষয় নয়। এই গভীর মুহূর্তে জনগণের আসলে বিষয়গুলো গুরুত্বসহকারে নেয়া প্রয়োজন! প্রত্যেক নাগরিক ব্যক্তিগতভাবে সাবধানতাগুলো অবলম্বন করতে বাধ্য। যা সমাজের সঙ্গে, দেশের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, কোয়ারেন্টাইনে সুস্থ অবস্থায় থাকলে ১৪ দিন আটকে রাখার পর আর ১দিনও বেশি তাঁকে আটকানো হবে না।
এদিকে জরিমানা করা পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, তাঁরা আসলে জানতেন না হোম কোয়ারেন্টাইনে কী কী নিয়মাবলী পালন করতে হয় !
এ অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের করোনা সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক করার একটা চরম বিফলতা প্রতক্ষ করা যাচ্ছে। সরকার তাহলে কী দেশের নাগরিকদের মধ্যে এখনো পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পারেননি ‘করোনা’র ভয়াবহতা এবং এর প্রতিরোধ কিংবা কোয়ারেন্টাইনে থাকার সময় কী কী নির্দেশ মানতে হবে?
বাংলাদেশ সরকারের এ এক বড় ফাঁক নজরে চলে এসেছে। এ মুহূর্তে পাওয়া তথ্যানুযায়ী দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে আরো ৩জন। দাঁড়িয়েছে ১৭ তে।
এদিকে ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬৯ জনে। ইংল্যাণ্ড ফেরত করোনা পজিটিভ পশ্চিমবঙ্গের সেই যুবক আপাতত স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছেন।
করোনা রুখতে জমায়েতে রাশ টেনেছে বিভিন্ন রাজ্যের প্রশাসন। উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান-সহ বিভিন্ন রাজ্যের কিছু কিছু জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
চিনের পর, করোনা-পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ইটালিতে। সেখানে এক দিনেই ৪৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা এই মুহূর্তে সর্বোচ্চ বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
এখন পর্যন্ত উত্তর পূর্ব ভারতের অসমে কোন করোনা আক্রান্তের সংবাদ নেই।