বাংলাদেশে অস্থায়ী আশ্রয়ে থাকা ১১ লাখ রোহিঙ্গা এবং অভাবগ্রস্ত স্থানীয় প্রায় ২ লাখ জনগোষ্ঠীর ভরণপোষণসহ অন্যান্য সেবা খাতে ২০২০ সালের জন্য ৬৭৭ মিলিয়ন ডলারের চাহিদাপত্র তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানের আওতায় ঢাকা ওই চাহিদাপত্র তৈরি করেছে।
মধ্য জানুয়ারিতে জেনেভায় ওই চাহিদাপত্রের আলোকে তহবিল সংগ্রহ হবে। বৃহস্পতিবার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা বিষয়ক ২৯তম জাতীয় টাস্কফোর্সের সভায় এসবের বিস্তারিত আলোচনা হয়। পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জাতিসংঘ প্রতিনিধিসহ টাস্কফোর্সের সংশ্লিষ্ট সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র মতে, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাসহ এখন প্রায় ১১ লাখ বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক কক্সবাজারে অবস্থান করছে। স্থানীয় জনগোষ্ঠি আরও প্রায় ২ লাখ, তারাও অভাবী। সব মিলে প্রায় ১৩ লাখ মানুষের জন্য এবার ৮৭৭ মিলিয়ন ডলারের চাহিদাপত্র তৈরি হয়েছে।
জয়েন্ট রেসপন্স প্যান বা জেআরপি ২০২০ ওই খসড়া ধরেই ফান্ড কালেকশন হবে জানুয়ারিতে। চলতি ২০১৯ সালে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্টির সংকট মোকাবিলায় ৯২০ মিলিয়ন ডলারের চাহিদা ছিলো। এর বিপরীতে এসেছে ৬১৩ মিলিয়র অর্থাৎ ৬৭ শতাংশ। ২০১৮ সালের জেআরসি ছিল ৯৫১ মিলিয়ন। পাওয়া গেছে ৬৫৫ মিলিয়ন অর্থাৎ ৬৯ শতাংশ। তবে সবচেয়ে বেশি জেআরপি ছিল ২০১৭ সালে। মাত্র ৩ মাসের জন্য। তখন ঢাকা এর পার্টনার ছিল না। সেই সময়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অঙ্গীকারের ৭৩ শতাংশ অর্থ এসেছিল।
উল্লেখ্য, সুরক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি, পানি ও হাইজিন এবং অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা খাতে ওই অর্থ ব্যয় করা হবে। ১১৭টি পার্টনার, ৮টি জাতিসংঘের অধীন সংস্থা, ৪৮টি আন্তর্জাতিক এনজিও এবং ৬১টি বাংলাদেশী এনজিও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করে।
উল্লেখ্য, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রোহিঙ্গা শিশু-কিশোর যাদের বয়স ১২ বছরের মধ্যে এমন ৩ লাখ ১৫ হাজার জন অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা পাচ্ছে। প্রায় ৩২শ লার্নি সেন্টারে তাদের গণিত, ইংরেজী এবং কর্মমুখি শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। বার্মিজ ভাষায় তাদের শিক্ষা দেয়া হয়।