বাংলাদেশের মাঈনুল আহসান নোবেলের ঔদ্ধত্য সীমা পার করে ফেলেছে। পরপর বিতর্কিত মন্তব্য করে চলেছেন তিনি।
গানের জন্যে এপার-ওপার বাংলার মানুষের কাছে সামান্য পৌঁছাতে পারলেও নিজের আচরণ কোনভাবেই ভালো করতে পারেননি গায়ক।
সম্প্রতি নোবেল তাঁর ফেসবুকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন, যার জেরে ফের সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছেন।
নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে লিখেছেন,”আমার স্ক্যান্ডাল হবে না তো কার হবে? চা-ওয়ালা নরেন্দ্র মোদীর? কেউ দেখবে চা-ওয়ালার স্ক্যান্ডাল?”। ঘৃণ্য এই মন্তব্যে ক্ষোভে ফুঁসছে ভারতের জনগণ।
নিজের প্রতিভার জন্যে যতটা না বিতর্কিত বাংলাদেশি গায়ক পরিচিত তার চেয়ে বেশি পরিচয় তিনি পেয়েছেন অসভ্য আচরণ ও তির্যক মন্তব্যের জন্য।
মানুষ তাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি, কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য একদম মেনে নেওয়া যায় না বলে নোবেলকে বিদ্ধ করেছে এদেশের আপামর বাঙালিরা। ভারতীয়রা তাকে একদম মেনে নিতে পারছে না, ভারতীয়রা কোনো ভাবেই দেশের প্রধানমন্ত্রীর অপমান সহ্য করবে না। এর আগেও নোবেল মেয়ে ঘটিত কারণে সংবাদে এসেছিল। তার নগ্ন ছবি প্রকাশ্যে এসেছিলো। এক কিশোরীর সাথে সহবাসের অভিযোগ ওঠে এই বাংলাদেশি উঠতি গায়কের বিরুদ্ধে।
এর আগে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়েও বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন অত্যন্ত ঘৃণ্য ভাষায়! এ কোন শিক্ষার পরিচয় তিনি বারবার দিয়ে চলেছেন?
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একমাত্র ব্যক্তিত্ব, যিনি দু-দেশের জাতীয় সংগীত স্রষ্টা। এপার বাংলা-ওপার বাংলার মাঝখানে মিলন সেতু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁকে বাদ দিয়ে হাসি-কান্না কোন আবেগই ভাবা যায় না।
অবাঙালিরাও মনের যে কোন আবেগ প্রকাশ করার জন্যে খানিকটা হলেও কবিগুরুর কবিতার পংক্তি মুখস্থ করে রাখেন।
মাঈনুল আহসান নোবেল যাকে আপনারা নোবেল নামে চেনেন, তিনি নিজের দেশের জাতীয় সংগীতকে অপমান করেছেন। অপমান করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। তাঁর মতে কবিগুরুর ‘সোনার বাংলা’ লেখায় বাংলাদেশকে ভালভাবে ব্যক্ত করা হয়নি। হয়েছে প্রিন্স মাহমুদের লেখায়।
“রবীন্দ্রনাথের লেখায় নয়, প্রিন্স মাহমুদের লেখায় আমার সোনার বাংলাকে বেশি ভালোভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে। এই গানের সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশের আবেগ। বাংলাদেশের সঙ্গে, বাংলার মানুষের সঙ্গে এই সোনার বাংলার যোগ অনেক বেশি এমনকী এই গানটিই বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হোক এমন দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মিছিলও হয়েছিল’। সম্প্রতি একটি লাইভ সাক্ষাৎকারে এসে এমন অজ্ঞতার পরিচয় দিলেন মাঈনুল আহসান নোবেল।
এ কি নোবেলের অজ্ঞতা, নাকি আত্মদম্ভ!
নোবেলের এমন উক্তিতে কেবল বাঙালি নয়, আপামর বিশ্ববাসী স্তম্ভিত হয়েছিল। শুধু যে নোবেলই এমন উক্তি করেছেন তা নয়, সঙ্গে অবস্থান করা সঞ্চালকও তাঁর সঙ্গে তালে তাল ঠুকে বলেছেন ‘হতে পারে…কবিগুরু তো অনেকদিন আগেই আমার সোনার বাংলা লিখেছিলেন’!
জাতির প্রতি শ্রদ্ধা থাকা একজন শিল্পী কখনো এমন বিরূপ মন্তব্যকে কখনো শ্রদ্ধা জানাতে পারেন না
জনপ্রিয় বাঙালি গায়িকা ইমন চক্রবর্তী নোবেলের এমন মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।
নোবেলকে তিনি চাবকাতে চেয়েছেন। গায়িকা ইমন সত্যিটাই ধরতে পেরেছেন যে, নোবেলের প্রচণ্ড গৌরব রয়েছে নিজের প্রতি।
ইমন বলেন, ‘আমরা এখনও ভুল করলে বড়রা শুধরে দেন। শাসন করেন। নোবেল আমার ছোট ভাইয়ের মতো। সদ্য কেরিয়ার শুরু করেছে। তাই শুরুতেই এরকম বিরূপ মন্তব্য ওর করা উচিত হয়নি। দিদি হিসেবে,শিল্পী হিসেবে এবং সর্বোপরি একজন বাঙালি হিসেবে আমি একথা বলেছি। নোবেল নিজেকে দ্রুত শুধরে নিতে পারলে ওর জন্যই ভালো’।
এপার-ওপার বাংলা সচেতন-দেশভক্ত মানুষের এত কড়া বার্তাতেও যে নোবেল তাঁর চরিত্র পাল্টাতে পাল্টাতে পারেননি, এবার ফের সে প্রমাণ পাওয়া গেল!