চীনে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া রহস্যজনক ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশে এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে না পারে সে জন্য চীন থেকে আসা যাত্রীদের পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ উল আহসান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তৌহিদ উল আহসান জানান, চীন থেকে আসা তিনটি সরাসরি ফ্লাইটের যাত্রীদের ফিজিক্যাল স্ক্রিনিং করানো হবে। বিমানবন্দরে স্থাপিত থার্মাল স্ক্যানারের ভেতর দিয়ে আসার সংকেত দিলে ওই যাত্রীকে পরীক্ষা করবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। সাধারণত কারও শরীরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট থাকলে থার্মাল স্ক্যানার সংকেত দেয়। এরপর ওই যাত্রীকে বিমানবন্দরে কোয়ারেনটাইন রুমে রেখে পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসা দেওয়া হবে। শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী তাকে (যাত্রী) কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। যাত্রীরা চীনের কোন শহর থেকে এসেছেন, কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, অবস্থানের সময়সহ বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হবে। চীনে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনাকারী বিমান সংস্থাগুলোকে এসব পদক্ষেপ সম্পর্কে ইতোমধ্যেই অবহিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঢাকা-চীন-ঢাকা রুটে প্রতিদিন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস, চায়না ইস্টার্ন ও চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইনসের ছয়টি ফ্লাইট যাওয়া-আসা করে। এরই অংশ হিসেবে গত সোমবার সকালে শাহজালাল বিমানবন্দরে ওরিয়েনটেশন প্রোগ্রাম করা হয়েছে। এতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), সিভিল অ্যাভিয়েশনের কর্মকর্তাসহ বিমানবন্দর–সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা অংশ নেন।
চীনে এই ভাইরাস সংক্রমণে বেশ কয়েকজন মারা গেছেন বলে জানা গেছে। তবে স্বাস্থ্য বিশ্লেষকের ধারণা, আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় দুই হাজারের কাছাকাছি হবে। চীনা কর্তৃপক্ষ আক্রান্তের সংখ্যা কমিয়ে বলছে।
ভাইরাসটিকে এক ধরনের করোনাভাইরাস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং যা নাক, সাইনাস বা গলার উপরিভাগে সংক্রমণ ঘটায়। নতুন এই ভাইরাস সংক্রমণে উদ্বিগ্ন দেশটির সাধারণ মানুষ। দেশটির হুনান শহরে এর উৎপত্তি, বেইজিংসহ অন্যান্য শহরেও ভাইরাসটির সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) চীনে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাস মোকাবেলায় এ সপ্তাহে জরুরি বেঠক ডেকেছে। বলা হচ্ছে, নতুন এই ভাইরাসের সঙ্গে প্রাণঘাতী রোগ সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোমের (সার্স) মিল রয়েছে। যা অনেকটা ফ্লুয়ের মতো। ২০০২ সালে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সারাবিশ্বে ৭০০ জন মানুষ মারা যায়।